মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা
মোংলার চিংড়ি ঘের থেকে উদগিরণ হওয়া গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করেছেন বাপেক্সের বিশেষজ্ঞরা। বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মিঠাখালী এলাকার পূর্বপাড়ার ওই গ্যাস উদগিরণস্থল পরিদর্শন শেষে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদল নমুনা সংগ্রহ করেন। সংগ্রহকৃত নমুনার দুই স্তরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন তৈরীতে সময় লাগবে প্রায় মাসখানেক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞদলের প্রধান হাওলাদার ওহিদুল ইসলাম। তিনি বাপেক্সের জেনারেল ম্যানেজার ল্যাব (পরীক্ষাগার)। তিনি বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই জানা যাবে এ গ্যাসের ধরণ। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি শ্যালো মার্স গ্যাস (লতাপাতা, গুল্ম পচা) অর্থাৎ উপরিভাগের মিথেন গ্যাস। তারপরও দুই ধরণের পরীক্ষায় একটিতে যদি হায়ার হাইড্রোকার্বনের উপস্থিতি পাওয়া যায় তাহলে সেটি হবে ভূগর্ভস্থ দাহ্য মূল্যবান বাণিজ্যিক গ্যাস। আর হায়ার হাইড্রোকার্বন না থাকলে হবে ভূ-উপরিভাগের মিথেন (মাটির নিচের লতাপাতা-গুল্ম পচা গ্যাস। যা কিছুদিন ধরে উঠতে উঠতে এক সময়ে শেষ হয়ে যাবে। আর বাণিজ্যিক হলে তো অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি পরিদর্শন ও নমুনা সংগ্রহের পর ঘের ও বাড়ীর মালিক দেলোয়ার শেখ (৩৫) কে এভাবে লাইন টেনে চুলায় গ্যাসের ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন। কারণ এতে বাড়ীসহ আশপাশে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে। এ সময় বাপেক্সের ল্যাব বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার ওহিদুল ইসলামের সাথে ছিলেন বাপেক্সের অপর কর্মকর্তা খুলনার সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিঃ এর জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) মোঃ তৌহিদুর রহমান ও তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বাগেরহাট জেলা আহবায়ক মোঃ নুর আলম শেখ। এদিকে এর আগেও এ গ্যাসের উদগিরণস্থল পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং বাপেক্সের প্রাথমিক প্রতিনিধিদলও।
উল্লেখ্য, মোংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বপাড়ার বাসিন্দা দেলোয়ার শেখের পৌনে তিন বিঘার চিংড়ি ঘের থেকে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে এ গ্যাসের উদগিরণ হয়ে আসছে। সেই উদগিরণস্থল থেকে পাইপ লাইন টেনে গত দুই সপ্তাহ ধরে ঘরের চুলায় এ গ্যাস দিয়ে রান্নাবান্না করছেন ঘের ও বাড়ীর মালিক দেলোয়ার পরিবার। আর এসব দেখার জন্য সেখানে দূরদূরান্তর থেকে প্রতিদিন ভিড় করছেন উৎসুক লোকজন।