মোংলায় ইউপি মেম্বারের যৌন হয়রানীর শিকার এক গৃহবধূ

আইন-অপরাধ আরো খুলনা সারাদেশ
শেয়ার করুন...

বায়জিদ হোসেন, মোংলা থেকেঃ
মোংলায় স্বামীর খোঁজ নিতে গিয়ে এক ইউপি মেম্বারের যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রণব কুমার মজুমদার ওই গৃহবধূকে শুধু যৌন হয়রানীই করেননি ১৯ দিন ধরে মোবাইল ফোনে কু-প্রস্বাবও দিয়ে আসছেন। মেম্বারের দেয়া কুপ্রস্তাবের সেই মোবাইল ফোনের অডিও কল রেকর্ড এরইমধ্যে ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনায় মেম্বার প্রণবকে আসামী করে মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও একটি অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের খাসেরডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মাখন লাল দাসের পুত্রবধূ ইতিরানী দাস তার অভিযোগে বলেন, তার স্বামী সঞ্জয় কুমার দাস দীর্ঘদিন ইউপি মেম্বার ও উত্তর চাঁদপাই মেছেরশাহ মাদ্রাসার শিক্ষক প্রণব কুমার মজুমদারের সাথে থাকতেন। কিন্তু গত দুই মাস ধরে তার কোন খোঁজ না পাওয়ায় ওই মেম্বারের দারস্থ হন ইতিরানী দাস। এরপর থেকেই তাকে ওই মেম্বার বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দিয়ে যৌন হয়রানী করে আসছেন। তাতে সাড়া না দেওয়ায় তার বাড়ীতে এসেও বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে মেম্বার প্রণব। এরপর গত ৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ টানা ১৯ দিন ওই নারীর মোবাইলে ফোন করে মেম্বার প্রণব কুমার দৈহিক মেলামেশা করার জন্য নানা ধরণের কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। সে সব কুপ্রস্তাবের কল রেকর্ড তার শ্বশুর মাখল লাল দাসকে শোনালে ওই মেম্বার প্রণবকে মাখন লাল দাস এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গুম ও তার পুত্রবধূ ইতিরানী দাসকে এসিড দগ্ধ করার হুমকি দেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনার বিষয়ে মিঠাখালী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রণব কুমার মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবী করে বলেন, এসব ষড়যন্ত্র, ওই কল রেকর্ড এডিট করা। এদিকে মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল বলেন, কল রেকর্ড শুনেছি, এটি মেম্বার প্রণবেরই কন্ঠ। অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণভাবে তিনি যে কথা বলেছেন তা নিয়ে মন্তব্য করার কোন ভাষা আমার নেই। মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী ওই নারীর সাথে মেম্বার প্রণব কুমার মজুমদারের যৌন হয়রাণীমূলক একাধিক কল রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। কিন্তু অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ বলে পাঠকের স্বার্থে এই প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদারও এই কল রেকর্ড শুনেছেন এবং এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এরইমধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে এবং কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেয়েই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.