জাফর আহমেদঃ ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন লাকসামের রাজাপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে এ কে এম হাবিবুর রহমান। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি তিনি। বয়োবৃদ্ধ অবস্থায় হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। শেষ বয়সে মুক্তিযোঅসুস্থদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান তিনি। ৭ মেয়ে ১ ছেলের জনক একে এম হাবিবুর রহমান ৭১ সালে কলেজ ছাত্র থাকা অবস্থায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৭১ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের মতিনগরে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২নং সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধকালীন অধিনায়ক মেজর হায়দার ও কমান্ডার আবুল বাশার এর নেতৃত্বে এ কে এম হাবিবুর রহমান যুদ্ধ করেন।
স্বাধীনতার পরে ৭৫ সালের নভেম্বরে জুনিয়র অডিটর হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে ভালোভাবেই দিনাতিপাত করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারের তালিকাভুক্ত হওয়ার বিষয়ে তখন গুরুত্ব না দেওয়ায় সরকারি তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হননি তিনি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এখন তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি চান। সম্প্রতি তার সাথে কথা বলে এসব বিষয় জানা গেছে । মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য একে এম হাবিবুর রহমান আবেদন করেছেন। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১১সালে ৬জন মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম হাবিবুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বরাবর প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন । ওই ৬ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাষ্যমতে এ কে এম হাবিবুর রহমান তাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এবং আতাউল গনি ওসমানী স্বাক্ষরিত তাহার স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র রয়েছে যার নাম্বার ৮১৫১০। উত্তরদা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী মজুমদার এ কে এম হাবিবুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছিলেন। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১সালে লাকসাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল বারী মজুমদার এ কে এম হাবিবুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কুমিল্লা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার বরাবরে লিখিত পত্র দিয়েছেন। ওই পত্রের আলোকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কুমিল্লা জেলা ইউনিট কমান্ডার শফিউল আহমেদ বাবুল ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১সালে একেএম হাবিবুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর নিকট পত্র দেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই – বাছাই নির্দেশিকা ২০১৬ এর বিধান মতে ২০১৭ সালে আপিল করেছেন একেএম হাবিবুর রহমান। চেয়ারম্যান , জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বরাবর লিখিত এ কে এম হাবিবুর রহমানের দরখাস্তে বর্তমান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি প্রত্যায়ন করেছেন। লাকসাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই- বাছাই ফলাফলে ৭নংসিরিয়ালে এ কে এম হাবিবুর রহমানের নাম রয়েছে। কুমিল্লা জেলার লাকসাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা (অন্তর্ভুক্তি)৩৯নং সিরিয়ালে এ কে এম হাবিবুর রহমানের নাম রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল এর সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে অসুস্থ বৃদ্ধ এ কে এম হাবিবুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আকুতি জানিয়েছেন এ কে এম হাবিবুর রহমান।