মানুষের জীবনমান উন্নত হওয়ায় যানজট বাড়ছে: সংসদে এলজিআরডি মন্ত্রী

অর্থনীতি জাতীয় পরিবেশ রাজনীতি
শেয়ার করুন...

অনলাইন ডেস্কঃ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘মানুষের জীবনমানের উন্নয়তি হওয়ার কারণেই সড়কে যানজট বাড়ছে।’ আওয়ামী লীগ আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলে উপজেলা পর্যায়েও যানজট হবে বলে মন্ত্য করেন তিনি।

বুধবার সংসদের বৈঠকে রাজধানীর যানজট নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
জেলা পরিষদ (সংশোধন) বিল-২০২২ এর ওপর আলোচনায় হারুনুর রশীদ বলেন, ‘ঢাকা আজকে নিশ্চল নগরীতে পরিণত হয়েছে। টানা পনের বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, কিন্তু ঢাকা শহরে এখন ভয়াবহ অবস্থা। শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, মশার উপদ্রব, এমনকি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও সাংঘাতিক বিপর্যয় ঘটেছে।’ তিনি বলেন, ‘অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে শুধু ঢাকা নয়, গোটা বাংলাদেশ একটি অবাসযোগ্য দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে।’

বিএনপি দলীয় সদস্য হারুন বলেন, ‘সরকার শুধু মেগাপ্রকল্পের দিকে দৃষ্টিপাত করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- যারা দেখতে পায় না, চোখে চশমা দিতে। আমরা চোখে চশমা দিচ্ছি। আজকে বাসা থেকে সচিবালয় যেতে তিন ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। রোজাদাররা অফিস থেকে বাসায় এসে ইফতার করতে পারছেন না। মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে গেলে মশার উপদ্রবে নামাজে বিঘ্নিত হচ্ছে। এগুলো বাস্তব চিত্র। এই জায়গাগুলোতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন?’
হারুন আরও বলেন, ‘আমরা কিছু বললে, আপনারা বলেন বিএনপির আমলে কী হয়েছে? আরে বিএনপিতো ২০ বছর আগে ক্ষমতায় ছিল। আপনারা টানা ১৫ বছর ক্ষমতায়। আপনাদের পরিকল্পনা কী? আজকে ঢাকা নগরী বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণে আপনারা বিএনপির চেয়ে উন্নতি করছেন? না কি বিএনপির চেয়েও অবনতি ঘটেছে? এই জায়গাগুলো বলেন।’ তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল বাস্তবায়ন হলেও ঢাকা মহানগরীর যানজট দূর করা যাবে না।’

এর জবাব দিতে গিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। তাই সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি বেড়েছে। আগামীতে আওয়ামী লীগ যদি আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকে, তাহলে উপজেলাতেও দেখবেন গাড়ির লাইন লেগে যাবে। হারুন সাহেবকে বলি- আল্লাহ যদি বাঁচায় রাখে, আওয়ামী লীগ আরেকটা মেয়াদ ক্ষমতায় থাকে, তাহলে আপনে দেখবেন যে, উপজেলায় ট্রাফিক জ্যাম হবে।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বায়ু দূষণ ও শব্দ দূষণের কথা বলা হয়েছে। অথচ ঢাকার মতিঝিলে আমার অফিস ছিলো। গুলশানে আসতাম, ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগতো। এখন লাগে আমার অনেক বেশি সময়। কেন লাগে, কারণ আমাদের আয় অনেক বাড়ছে। ৩০০ থেকে ৪০০ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশ থেকে ২ হাজার ৫৯১ ডলার মাথাপিছু ডলারের দেশ। এখন সবাই গাড়ি কিনছেন।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের কথা বলছেন, এখানে মানুষ যেভাবে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে, সবাই ঢাকায় মুভ করছে। সারা পৃথিবীতেই এমন হয়েছে। লন্ডন, টোকিও, কলকাতায়ও হয়েছে। তারা এটাকে ম্যানেজ করেছে। আমরাও এটা নিয়ে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাকে ড্যাপের সভাপতি বানিয়েছেন, সেখানে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয় বাড়ার কারণে মাথাপিছু চাহিদা বাড়ছে, মাথাপিছু ওয়েস্ট বাড়ছে। ঢাকা শহরের ওয়েস্ট কালেকশন করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশন নিয়মিত রাস্তাগুলো পরিষ্কার করছে। সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এমনকি ইউনিয়ন ওয়েস্ট সংগ্রহ করার জন্য ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে।’


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.