মোঃ আল আমিন :মাধবপুর(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি:
পল্লী বিদ্যুতের বৈদ্যুতিক খুঁটি ধসে তাদের বাড়িতে পরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও সেই সময় বৈদ্যুতিক শর্ট খেয়ে ঝলসে যায় তার মুখমন্ডল ও প্রচন্ড আহত হন।কয়েক সপ্তাহ আগের এই ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ মৌখিক দুঃখ প্রকাশ করা হলেও শিশুটির চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা তার হতদরিদ্র পরিবারের জন্য যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে!
সেতু নামের ৯ বছরের ওই শিশুর বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউপির সীমান্তবর্তী কমলপুর গ্রামে।সেতুর মা রওসন আরা স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী। দিন আনা দিন খাওয়ার সংসার অভাব অনটনের সংসার। টাকার জন্য ঠিকমতন স্কুলেও যেতে পারেনা সেতু।তার মুখের পরিবর্তিত চেহারা দেখে তার সহপাঠীরা ব্যঙ্গ-বিদ্রোপ ও হাসাহাসি করছে।
ঢাকায় বার্ন ইউনিটে পুড়া মুখের উন্নত চিকিৎসার করানোর সক্ষমতা নেই হতদরিদ্র সেতুর পরিবারের।দুদিন হলো তার পিতা লিটন মিয়াকে মারামারির ঘটনায় পুলিশ আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।তার পিতা হাজতে আছে সে কথা সে কষ্ট পাবে ভেবে তার মা তাকে জানায় নি।
ঝলসে যাওয়া মুখমন্ডলের প্রচন্ড ব্যাথায় সেতু কাদছে আর বার বার বলছে,চকলেট ও মিষ্টি নিয়ে আমার বাবা এখনো আসছে না কেন!
পার্শ্ববর্তী মুদির দোকানে এদের বকেয়া টাকা জমা থাকার কারণে দোকানদার বাকীতে তাদের সদাইও দিচ্ছে না।এখন মা ও মেয়ের চোখের পানিই যেন নিয়তি!
অন্যদিকে সেতুদের পাড়ার ৫ টি পরিবারের একমাত্র পথচলার রাস্তাটি স্থানীয় একজনের ব্যক্তি মালিকানা হওয়াতে সেটি নিয়েও চলছে দ্বন্দ্ব সংঘাত।রাস্তা বন্ধ হওয়ারও উপক্রম তৈরি হয়েছে ।থানায় অভিযোগ থাকায় স্থানীয় পুলিশ ফাড়ির এক এসআই গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) সেই রাস্তাটি বন্ধ কবে দিবে বলায় প্রচন্ড অনিরাপত্তা ও দুঃখ বিরাজ করছে ওই পাড়ার সকলের মধ্যে।
এই ঘটনায় অশ্রুসিক্ত নয়নে সেতু বলছে,রাস্তাটা যদি বন্ধই করা হয় তাহলে আমার লিটন বাবা গাড়ি নিয়ে আমার কাছে চকলেট নিয়ে কিভাবে আসবে!
গতকাল মঙ্গলবার রাতে (২০ ফেব্রুয়ারী) মাধবপুরের ইউএনও একেএম ফয়সাল ফোন দিয়ে তাদের সার্বিক খোঁজখবর নেন।ইউএনও কর্তৃক সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তির মুখ দেখছেন শিশুটির মা রওশন আরা।ইউএনওর সহযোগিতার আশ্বাস বাস্তবায়নের অপেক্ষায় দিনগুনছে এরা।
মাধবপুরের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পেয়ারা বেগম জানান, আসলে মেয়ে শিশুটি অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার করার চেষ্টা থাকবে। এখানে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনদেরও বেশি দায়িত্ব রয়েছে শিশুটির পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে।