অনলাইন ডেস্কঃ এক ভয়ঙ্কর সৌরঝলক (‘সোলার ফ্লেয়ার’)-এর জন্ম হয়েছে সূর্যে। যা আছড়ে পড়েছে পৃথিবীতে। গত চার বছরে এতটা ভয়ঙ্কর সৌরঝলকের ধাক্কা আর সইতে হয়নি পৃথিবীকে। সেই সৌরঝলকে একেবারে তছনছ হয়ে গিয়েছে আটলান্টিক মহাসাগরের উপরের আকাশে যাবতীয় রেডিয়ো যোগাযোগ ব্যবস্থা। যার জেরে আটলান্টিক মহাসাগর উপকূলবর্তী আমেরিকা ও ইউরোপের বিশাল এলাকা জুড়ে রেডিয়ো যোগাযোগ ব্যবস্থায় কার্যত এখন ‘ব্ল্যাক আউট’।
এই ভয়ঙ্কর সৌরঝলকটি নাসার ‘সোলার ডায়নামিক্স অবজারভেটরি’ (এসডিও)-র প্রথম নজরে পড়ে গত ৩ জুলাই। সেই সৌরঝলকটি ৪ জুলাই পর্যন্ত দেখা গিয়েছে সূর্যে। নাসা জানিয়েছে, ২০১৭ সালের পর গত চার বছরে এত শক্তিশালী সৌরঝলক আর দেখা যায়নি। এটি সৌরঝলকদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী শ্রেণি ‘এক্স-ওয়ান’ পর্যায়ের। ১১ বছর মেয়াদের যে নতুন সৌরচক্রটি সবে শুরু হয়েছে, তাতে সূর্যের পিঠে (‘ফোটোস্ফিয়ার’) জন্মানো বিশেষ একটি সৌরকলঙ্ক (‘সানস্পট’) থেকেই উৎপত্তি হয়েছে এই ভয়ঙ্কর সৌরঝলকের। সূর্যের উত্তর-পশ্চিম দিকে।
সূর্যের বায়ুমণ্ডল (‘করোনা’) ও আবহাওয়ার উপর সব সময় নজর রেখে চলা আমেরিকার ‘স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশান সেন্টার’ (এসডব্লিউপিসি) জানিয়েছে, কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেই ভয়ঙ্কর শক্তিশালী সৌরঝলক ধেয়ে আসে পৃথিবীর দিকে। ধেয়ে আসা সেই সৌরঝলক পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অনেকটা উপরের আয়নোস্ফিয়ারে ব্যাপক ঝঞ্ঝা সৃষ্টি করে। সেই স্তরে থাকা প্রচুর পরিমাণ কণাকে আয়নে পরিণত করে। তার ফলে, ভূপৃষ্ঠের উপর ৬০ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় খুব শক্তিশালী বিদ্যুৎপ্রবাহের জন্ম হয়। সেই বিদ্যুৎপ্রবাহ ভূপৃষ্ঠেও পৌঁছয়। তার জেরে পৃথিবীর দুই মেরুর চৌম্বক ক্ষেত্রেরও পরিবর্তন ঘটেছে। আর বিশেষ করে তা আটলান্টিক মহাসাগরের উপরে পৃথিবীর যাবতীয় রেডিয়ো যোগাযোগ ব্যবস্থাকে তছনছ করে দেয়। ফলে, অতলান্তিক মহাসাগরের উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রেডিয়ো যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
সূর্যের পিঠে আচমকাই হয় সৌরঝলক। এর মাধ্যমে সূর্যের অন্দর থেকে বিপুল পরিমাণে শক্তি বেরিয়ে আসে। তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা মহাকাশে। এই সৌরঝলকগুলির মধ্যে থাকে রেডিয়ো, এক্স-রে ওবং গামা রশ্মি।