নৌকায় যাচ্ছিলেন ইউরোপের পথে দুর্ঘটনার পর ভাসমান অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা হয়
অনলাইন ডেস্কঃ ভূমধ্যসাগর থেকে ২৬৭ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গত বৃহস্পতিবার উদ্ধার করেছে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ২৬৪ জন। আর তিনজন মিসরের নাগরিক। তারা সবাই লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপের পথে রওনা হয়েছিলেন। খবর এএফপির।
তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড বলেছে, নৌকায় রওনা হয়েছিলেন ওই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। এক পর্যায়ে নৌকাটি ভেঙে ডুবে যায় এবং তারা সাগরে অসহায়ের মতো ভাসছিলেন। ভাসমান অবস্থায়ই তাদের উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া ২৬৭ জনকেই নৌবাহিনীর সহায়তায় লিবিয়া সীমান্ত সংলগ্ন সাগরের তীরে আনা হয়। পরে তাদের হস্তান্তর করা হয় আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা (আইওএম) এবং রেড ক্রিসেন্টের কাছে।
আইওএম জানায়, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের তিউনিসিয়ার জেরবার দ্বীপের একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাটির তথ্য অনুষায়ী, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত লিবিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করে তিউনিসিয়ায় আটকা পড়েছে হাজারের বেশি মানুষ। আর অভিবাসনপ্রত্যাশীর এই সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১১ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী লিবিয়া হয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। গত বছরের চেয়ে এই সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি।
রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা মোঙ্গি স্লিম বলেন, অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিউনিসিয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যে সংখ্যক মানুষ রাখার কথা, তার চেয়ে বেশি এখন সেখানে অবস্থান করছেন।
এর আগে ১০ জুন ১৬৪ বাংলাদেশিকে তিউনিসিয়া উপকূল থেকে উদ্ধার করে দেশটির কোস্টগার্ড। তারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। গত ১৮ মে ৩৬ জন এবং ২৭ ও ২৮ মে উপকূল থেকে ২৪৩ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড।
ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন দেশের ১৯ হাজার ৬১ জন ইতালি পৌঁছেছেন। এই তালিকার শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের দুই হাজার ৬০৮ জন ইউরোপে পৌঁছেছেন। গত ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপ যাত্রার সময় অন্তত ৮১০ অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন।
জাতিসংঘ বলেছে, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত ৭৬০ জন। গত বছর একই সময়ে মারা যান এক হাজার ৪০০ জন।