- এমন একটি দৃষ্টিনন্দন ভ্রমণ গন্তব্যের তালিকা করেছি, যেগুলোতে বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন। জায়গাগুলো সম্পর্কে কিছুটা জানাশোনা ও কীভাবে যেতে হবে তা জানা থাকলে কোনো ঝামেলা ছাড়া যাওয়া সম্ভব।
আব্দুল ওয়ারিথ খানঃ
বিশ্বে বিস্মিত হওয়ার মতো অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন স্থান আছে। কোনোটি অনেক বেশি জনপ্রিয়, কোনোটি আবার কিছুটা কম। উন্নত দেশের নাগরিকদের মতো বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা চাইলেই বিশ্বের যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় ভিসা ছাড়া যেতে পারেন না।
তবে আমরা এমন একটি দৃষ্টিনন্দন ভ্রমণ গন্তব্যের তালিকা করেছি, যেগুলোতে বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন। জায়গাগুলো সম্পর্কে কিছুটা জানাশোনা ও কীভাবে যেতে হবে তা জানা থাকলে কোনো ঝামেলা ছাড়া যাওয়া সম্ভব।
তালিকায় ঢোকার আগে আরেকটি বিষয় একটু স্পষ্ট করে নিই। তালিকার কিছু কিছু দেশে ই-ভিসা এবং কিছু দেশে অন অ্যারাইভাল ভিসা, অর্থাৎ সেখানে পৌঁছানোর পর ভিসা দেওয়া হয়। এগুলো খুবই সহজ পদ্ধতি এবং মাত্র ৩০ মিনিটে এসব ভিসা পাওয়া সম্ভব।
ভুটান
হিমালয়ের কেন্দ্রে অবস্থিত ভুটান অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দিয়ে ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে। দেশটি ‘সুখের রাজ্য’ হিসেবে পরিচিত। এখানে তুষারে আবৃত পাহাড়, বিশাল উপত্যকা এবং প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির দেখা যাবে। ভুটান ভ্রমণে আপনি অপার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন আর বাংলাদেশিদের আগে থেকে কোনো ভিসা নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
মালদ্বীপ
মালদ্বীপের পরিচিতি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় স্বর্গ হিসেবে। টলটলে স্বচ্ছ পানি, বালুময় সৈকত ও সামুদ্রিক প্রাণীদের জীবন কাছ থেকে দেখতে দেশটি ঘুরে আসতে পারেন। মালদ্বীপ অনেকগুলো দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দেশ। দেশটির দ্বীপগুলোতে বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্ট আছে, যেখানে পর্যটকরা ডুবসাঁতার থেকে ডাইভিং- সব ধরনের অভিজ্ঞতাই নিতে পারবেন। বাংলাদেশিদের জন্য দেশটিতে অন অ্যারাইভাল ভিসার ব্যবস্থা আছে।
বাহামাস
অসাধারণ সৈকত, প্রাণবন্ত প্রবাল প্রাচীর এবং বায়ুমণ্ডলের কারণে পর্যটকরা বাহামাস দীপপুঞ্জে ঘুরতে যান। এই দীপপুঞ্জের পানি বিশ্বের সবচেয়ে স্বচ্ছ পানির মধ্যে অন্যতম। পর্যটকরা ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার কাটা ও পানির নিচের গুহা দেখার অভিজ্ঞতা পেতে পারেন। বাংলাদেশিরা যেকোনো ধরনের ভিসা ছাড়াই এখানে ভ্রমণ করতে পারবেন।
তুরস্ক
তুরস্ক এশিয়া ও ইউরোপের সংযোগস্থল। প্রাচীন ঐতিহ্য, দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সংস্কৃতির দেশ এটি। পর্যটকরা এখানে অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার, রঙিন বাজার, সাগরের নির্মল পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন। তুরস্ক ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশিদের ই-ভিসার আবেদন করতে হবে। দেশটিতে ভ্রমণের আগেই এই ভিসা আবেদন করতে হবে।
বার্বাডোস
ক্যারিবিয় অঞ্চলের এই দ্বীপরাষ্ট্রটি সৈকত, প্রাণবন্ত সংস্কৃতি ও উৎসবের জন্য বিখ্যাত। দেশটিতে আপনি যেমন সমৃদ্ধ ঔপনিবেশিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারবেন, তেমনি কচ্ছপের সঙ্গে সাঁতার কাটা, পানির নিচের প্রবাল প্রাচীর এবং নানা রকম খাবার উপভোগ করতে পারবেন। কোনো ভিসা ছাড়াই বাংলাদেশিরা এই দেশটি ভ্রমণ করতে পারবেন।
উজবেকিস্তান
উজবেকিস্তানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের তুলনায় ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে এর জনপ্রিয়তা অনেকটাই কম। দেশটিতে প্রাচীন সিল্ক রোডের উপস্থিতি চোখে পড়বে। বুখরা এবং খিভা শহরে প্রচুর ঐতিহাসিক মসজিদ, সূক্ষ্ম কারুকাজযুক্ত টাইলওয়ার্ক এবং চমৎকার প্রাসাদ রয়েছে। দেশটিতে ভ্রমণের আগে বাংলাদেশিদের ই-ভিসার প্রয়োজন হবে।
বলিভিয়া
বিশাল আন্দিজ পর্বতমালা, আমাজন বনের বিশাল অংশ এবং আতাকামা মরুভূমি- সবকিছুই দেখা যাবে বলিভিয়ায়। দক্ষিণ আমেরিকার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য ও ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে দেশটিতে। আর সবচেয়ে ভালো দিক হলো দেশটিতে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশিদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া হয়।
মৌরিতানিয়া
সাহারা মরুভূমির দুর্লভ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন এই দেশে। এছাড়া পর্যটকরা প্রাচীন কাফেলা দলের ভ্রমণ পথ ও যাযাবরদের জীবনযাপন কেমন ছিল, তাও জানতে পারবেন। ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ এই দেশ, যা বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। বাংলাদেশিরা দেশটি ভ্রমণে গেলে অন অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন।
জ্যামাইকা
সমৃদ্ধ রন্ধনশৈলী এবং রাস্তায় প্রাণবন্ত গ্রাফিতির সন্ধান মিলবে জ্যামাইকায়। ডানস জলপ্রপাত থেকে ব্লু মাউন্টেইন- অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের যেন কমতি নেই দেশটিতে। দেশটি ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশিদের কোনো ভিসার প্রযোজন নেই।
সিশেলস
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জটিতে মোট ১১৫টি দ্বীপ আছে। প্রকৃতিপ্রেমী এবং সমুদ্রপ্রেমীদের জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা। প্রাকৃতিক গুহা, সবুজ বন এবং অনন্য স্থানীয় জীবনের সমন্বয়ে সিশেলস প্রাকৃতিক বিস্ময়ে পরিপূর্ণ একটি দেশ। আপনি যদি বাংলাদেশি হিসাবে সেখানে ভ্রমণ করেন তবে আপনাকে অন অ্যারাইভাল ভিসা নিতে হবে।
অনুবাদ করেছেন আহমেদ হিমেল
সূত্রঃ দ্য ডেইলি স্টার