
গোকুল চন্দ্র রায়, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর, প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বেইস ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী ভাতগাঁও শাখার বিরুদ্ধে আয়োজিত মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে বীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বেইস মিতালী ভাতগাঁও শাখা।
লিখিত বক্তব্যে শাখাটির ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে বেইস ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচী ভাতগাঁও শাখার কয়েকজন ঋণগ্রহীতা ও কিছু সংখ্যক এলাকাবাসী মানববন্ধন করে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করেন। এসব অভিযোগে সংস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় বিষয়টির সুষ্ঠু ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি এডুকেশন (বেইস) একটি জাতীয় পর্যায়ের স্বনামধন্য স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন সংস্থা, যা ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবা ও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করে আসছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বেইস দিনাজপুরসহ ৬টি জেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচী চালিয়ে আসছে। শুধু বীরগঞ্জ ও কাহারোল উপজেলায় ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচীর আওতায় বর্তমানে ৭ হাজার ৪৪৪ জন সদস্য সুবিধাভোগী হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সংস্থাটি এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আস্থা অর্জন করেছে।
ব্যবস্থাপক জানান, ভাতগাঁও শাখার সাবেক ঋণ সুপারভাইজার জান্নাতুল ফেরদৌস ২০১৯ সালে যোগদান করেন এবং গত ৩ আগস্ট ২০২৫ তারিখে তাকে কাহারোল শাখায় বদলি করা হয়। এরপর তিনি কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে সদস্যদের কাছ থেকে আদায়কৃত সঞ্চয় ও ঋণের কিস্তির টাকা অফিসে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হন।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, ১৭ জন সদস্যের ২ লাখ ২ হাজার ৮৫৯ টাকা পাশবইয়ে এন্ট্রি থাকলেও অফিসে জমা হয়নি। এছাড়া আরও ১২ জন সদস্য মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন যে, সুপারভাইজার তাদের কাছ থেকে টাকা নিলেও পাশবইয়ে উল্লেখ করেননি এবং অফিসে জমাও দেননি। এভাবে মোট ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৬৮০ টাকা সহ সর্বমোট ১৫ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৯ টাকা আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এ অভিযোগকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত সুপারভাইজারের যোগসাজশে কিছু সদস্য ও বহিরাগত ব্যক্তিরা মানববন্ধন করে বেইসকে বিভ্রান্তিকরভাবে দায়ী করেন বলে দাবি করেন তিনি। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতোমধ্যে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে। অভিযুক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, বেইস একটি মানবিক সামাজিক উন্নয়নমুখী প্রতিষ্ঠান। একক কোনো অনিয়মের দায় পুরো সংস্থা নেবে না। আমরা স্বচ্ছতার সাথে ঘটনার বিচার চাই।
সভাপতির পক্ষ থেকে ওমর ফারুক লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ ওমর ফারুক, অধ্যক্ষ মোঃ জুলফিকার আলী ভুট্টু, শিক্ষা প্রকল্প ব্যবস্থাপক বাবু গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী, আইটি প্রশিক্ষক কামরুল ইসলাম, হিসাব রক্ষক সিরাজুল ইসলাম ও মোছাঃ তাজমিরা বেগমসহ মাঠকর্মী আল আমিন প্রমুখ।