বানারীপাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতাঃ
বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে ইলিশ মাছ শিকার করতে গিয়ে বজ্রপাতে আহত হয়ে নৌকা থেকে পড়ে নিখোঁজের প্রায় ৫২ ঘন্টা পরে জেলে রিয়াজের (২০) লাশ নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে।
২১ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সন্ধ্যা নদীর বাংলাবাজার এলাকার খাল মুখে রিয়াজের ভাসমান লাশ তার মামা খোকন দেখতে পেয়ে লোকজন নিয়ে উদ্ধার করেন।
দুর্ঘটনার পরে বরিশাল ও বানারীপাড়ার ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরীরা ওই দিন ১৯ জুন রবিবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘন্টা ও ২০ জুন সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়েও রিয়াজের সন্ধান পাননি। এছাড়া ঘটনার পর সন্ধ্যা নদীতে মাইকিং করে রিয়াজের নিখোঁজের বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানানোরর পাশাপাশি স্বজন ও স্থানীয়রা ৮/১০টি ট্রলার নিয়ে সন্ধ্যা নদীর বানারীপাড়া ও পার্শ্ববর্তী স্বরূপকাঠি এবং উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রিয়াজের খোঁজ চালায়।
অবশেষে ২১ জুন মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রিয়াজের মরদেহ নদীর বাংলাবাজার খাল মুখে ভেসে ওঠে।
প্রসঙ্গত, ১৯ জুন রবিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে প্রচন্ড বজ্রসহ ঝড় বৃষ্টির মধ্যে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের দিদিহার গ্রামের বাসিন্দা ফারুক হোসেনের বড় ছেলে রিয়াজ ও একই এলাকার ইব্রাহিমের ছেলে সিফাত (১৫) নলশ্রী ট্রলার ঘাট সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে জাল দিয়ে ইলিশ মাছ ধরছিলো। এসময় বজ্রপাতে তারা দুজন আহত হয়ে নদীতে পড়ে যায় । অপর জেলেদের সহায়তায় স্থানীয়রা সিফাতকে উদ্ধার করতে পারলেও রিয়াজ নিখোঁজ হয়। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারের জন্য বানারীপাড়া ও বরিশাল ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ছুটে এসে একনাগারে প্রায় ৪ ঘন্টা আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। সোমবার (২০ জুন) সকালে তারা পুনরায় এসে উদ্ধার চেষ্টা চালিয়েও রিয়াজের কোন সন্ধান পাননি। এদিকে রিয়াজের মরদেহ তার দিদিহার গ্রামের বাড়িতে নেওয়ার পরে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। বাবা-মাসহ স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। স্বজনদের কান্না বিলাপে উপস্থিত সবাইকে অশ্রুসজল করে।
খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে রিয়াজের বাড়িতে বানারীপাড়া থানা থেকে পুলিশ যায়।
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোসেন জানান, পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ও দুর্গন্ধ বের হওয়ায় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে
রাতেই লাশ দাফনের কথা রয়েছে।