রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় পৌরসভার কর আদায়কারী মো. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালণ ও আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি উপজেলার কুন্দিহার গ্রামের ফারুক হোসেন নামের এক ব্যাক্তি বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. বায়েজিদুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, পৌরসভার কর আদায়কারী মো.সাইফুল ইসলাম পৌরসভার পাশাপাশি উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে সুপারভাইজার পদে কাজ করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন আকতারের যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার হাজিরা খাতায় নিয়মিত উপস্থিতির স্বাক্ষর করে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে কাজ করার অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি পরিসংখ্যান অফিসের প্রতি বছরের কৃষি শুমারী, অর্থ শুমারী ও আদম শুমারীসহ সকল শুমারী কাজে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নসহ তিনটি ইউনিয়নে সুপারভাইজার পদে কাজ করে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রত্যন্ত ইউনিয়ন পর্যায়ে দিনভর পরিসংখ্যান অফিসের কাজ করে সন্ধ্যায় এসে তিনি পৌরসভার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। তিনি পৌরসভা থেকে কোন অনুমতি কিংবা ছুঁটি না নিয়ে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে প্রতি বছর দুই মাস ব্যাপী এ কার্যক্রম করে আসছেন এবং এ কাজের জন্য যে টাকা তিনি পান তার ৩০ ভাগ পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ৭০ ভাগ টাকা নিজে নেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। কর আদায়কারী পৌরসভার একটি অতি জনগুরুত্বপূর্ণ পদ কিন্তু মো. সাইফুল ইসলাম কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি কিংবা ছুঁটি না নিয়ে বছরের পর বছর নিজের আর্থিক স্বার্থে খেয়ালখুশি মত অন্য আরেকটি অফিসে কাজ করে বাড়তি টাকা ইনকাম করে থাকেন। চাকরি বিধি অমান্য করে একই সঙ্গে তিনি দুই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালণ করে দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিয়ে আর্থিক লাভবান হয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি করছেন। এ অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে খোঁজ নিলে বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পৌর কর আদায়কারী মো.সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, তিনি পরিসংখ্যান অফিসে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ওই দায়িত্ব পালণ করে আসছেন। সরকারি কাজ একাধিক অফিসে করা যায় বলেও তিনি জানান। এ বিষয়ে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) শাহীন আকতার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, কর আদায়কারী যেহেতু ছুটি নেননি সেকারনে তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। এছাড়া অফিসে হাজিরা খাতায় কেউ কারও স্বাক্ষর নেন না যার স্বাক্ষর তিনি নিজেই করেন। এ প্রসঙ্গে বানরীপাড়া পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বায়েজিদুর রহমান জানান, পৌরসভার কর আদায়কারী মো. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তনয় সিংহকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ তনয় সিংহ বলেন, তদন্ত চলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
