রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় অর্থ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অধীনস্থ স্বায়ত্বশাসিত অলাভজনক সংস্থা সোস্যাল ডেপেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এসডিএফ) সদস্যদের জন্য বরাদ্দের করোনা প্রণোদনার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের পশ্চিম আউয়ার এলাকায় সংস্থাটি তাদের গ্রাম সমিতির ১১৯ জন হতদরিদ্র সদস্যকে সম্প্রতি করোনা প্রণোদনা হিসেবে ৫ হাজার টাকা করে দেয়। এর মধ্যে বেশ কিছু সদস্যের বিকাশ নম্বরের স্থলে গ্রাম সমিতির ক্যাশিয়ার খাদিজা ও ভিসিডি সেলিনা তাদের নম্বর দিয়ে টাকা তুলে ওই সদস্যদের এক/দুই হাজার টাকা করে ধরিয়ে দিয়ে বাকীটা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে সদস্যরা এসডিএফের প্রধান কার্যালয় ও স্থানীয় সৈয়দকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মৃধার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সংস্থার প্রধান কার্যালয় থেকে বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। এ বিষয়ে ১০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এসডিএফ’র সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের পশ্চিম আউয়ার গ্রাম সমিতির স্থায়ী কার্যালয়ে সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় সাহা,জেলা ব্যবস্থাপক আজাদুর রহমান ও সৈয়দকাঠি অফিসের ইনচার্জ জাকির হোসেন অভিযুক্ত ও বঞ্চিত সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এসময় সেখানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মৃধা,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মৃধা ও আওয়ামী লীগ নেতা বজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে অভিযুক্তরা সদস্যদের প্রণোদনার আত্মসাতকৃত ২৮ হাজার ৭০০ টাকা জমা দেন। এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মৃধাসহ উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অভিযুক্তদের বিচার ও আত্মসাতকৃত টাকা সদস্যদের মাঝে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বললে সেলিনার ভাসুর আলী আকবর ও দেবর ফকরুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সঙ্গে থাকা দু’ আওয়ামী লীগ নেতাসহ উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ও তাদের বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেন। ফলে তারা বৈঠক থেকে বের হয়ে যান। বঞ্চিত সদস্য ও তাদের স্বজনরা এসময় এসডিএফ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ বিষয়ে সংস্থার বরিশালের আঞ্চলিক পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় সাহা ও জেলা ব্যবস্থাপক আজাদুর রহমান জানান,প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ৯ জন সদস্যের আত্মসাৎকৃত টাকা দুইজন কর্মী তাদের কাছে জমা দিয়েছেন। এখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি সদস্যদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে সৈয়দকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন মৃধা অভিযুক্ত সেলিনার ভাসুর আলী আকবর ও দেবর ফকরুল ইসলাম তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন জানিয়ে বলেন, তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতির এ বিষয়টি অর্থ মন্ত্রনালয়কে অবহিত করবেন। তিনি এসডিএফের স্থানীয় কার্যালয়ের ইনচার্জ (সুপারভাইজার) জাকির হোসেনসহ অভিযুক্তদের অপসারন ও গ্রাম সমিতির কমিটিগুলোর পুর্নগঠনের দাবি জানান। সদস্যরাও একই দাবি জানিয়েছেন। এদিকে সেলিনা ও খাদিজা টাকা আত্মসাৎ এবং সেলিনার ভাসুর আলী আকবর ও দেবর ফকরুল ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার লোকজনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্লেখ্য এসডিএফ ২০০০ সাল থেকে কমিউনিটি চালিত উন্নয়ন (সিডিডি) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রামীণ দারিদ্র বিমোচনে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে করে আসছে।