বাকৃবি প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ফিড দা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিশ’ এর আয়োজনে ‘বাংলাদেশ সেক্টর মিটিং—২০২২’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গবেষণা কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে সোমবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে ফিড দ্যা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিশ এর এশীয় আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ড. এম. গোলাম হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক, বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের গবেষণা ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ড. খলিলুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, মৎস্যখাতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। এই ধরনের গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন। পরিচালিত গবেষণা প্রকল্প সমুহের অর্জিত ফলাফল বাংলাদেশের মৎস্যখাতের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে বলেও আশা করছি।
সেমিনারে সূচনা বক্তব্য রাখেন ফিশ ইনোভেশন ল্যাবের এশিয়া অঞ্চলের বিশেষজ্ঞ ও যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক প্রফেসর ড. মদন মোহন দে।
পরিচালিত গবেষনা প্রকল্পের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কার্যক্রমের উপর বক্তব্য প্রদান করেন ইনোভেশন ল্যাবের পরিচালক যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মার্ক এল. লরেন্স। তিনি বলেন, ফিড দ্যা ফিউচার ইনোভেশন ল্যাব ফর ফিশ দারিদ্র বিমোচন, মৎস্যভিত্তিক পুষ্টি বৃদ্ধিকরণ খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রান্তিক চাষীদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে মৎস্যখাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন গবেষণা কর্মসূচি পরিচালনা করে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে জাতিসংঘের ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে বাংলাদেশে মাছের ম্পার্ম ব্যাংক, ফেক্যাল প্যাথজেনের উৎস নির্ণয়, মৎস্যখাতের ভ্যালু চেইন অংশগ্রহণমূলক করা ও মানোন্নয়নের জন্য, রপ্তানি বৃদ্ধি, যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে পরিচালিত প্রকল্প সমূহে ফিশ ইনোভেশন ল্যাব সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও কৌশলগত সহযোগিতা প্রদান করছে।
সেমিনারে টেকনিক্যাল সেশনে স্পার্ম ব্যাংক প্রকল্পে কার্প জাতীয় মাছের জিন উন্নয়নের মাধ্যমে উক্ত মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে পরিচালিত গবেষনা কার্যক্রমের অর্জিত ফলাফল ও ভবিষৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার।
এসময় জেনেটিক উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত প্রকল্পের অগ্রগতি ও অর্জন উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. ম্যাথু হ্যামিলটন। ফেকাল প্যাথজেন প্রকল্পে বাংলাদেশ অংশের প্রধান গবেষক ড. বদরুল আমীন মৎস্যভিত্তিক প্রাণিজ প্রোটিনের গুনগতমান উন্নয়নের লক্ষ্যে মাছের দূষণের উৎস নির্ণয়, ধরন ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য ঝুিঁক মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে পরিচালিত গবেষণার কার্যক্রমের অগ্রগতি উপস্থাপন করেন। অন্তভুর্ক্তিমূলক মাছের ভ্যালু চেইন উন্নয়নের কৌশল প্রণয়ন ও রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রমের অগ্রগতি ও ভবিষৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন উক্ত প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান খান।
এছাড়াও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মৎস্যখাতের অবদান নির্ণয়ের সূচক সমূহের অধিকতর বিশ্বস্ত ও কার্যকরী পরিসংখ্যান নিরুপনের উদ্দেশ্যে মেশিন লার্নিং প্রয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই ও এর প্রয়োগের মাধ্যমে মৎস্যখাতের টেকসই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিচালিত গবেষণা কর্মসূচীর অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয় সমূহ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মো. মাহফুজুল হক।