বাঁশের সাঁকোই একমাত্র পথ সুন্দরগঞ্জের ২০ গ্রামের

পরিবেশ বিশেষ প্রতিবেদন রংপুর সারাদেশ
শেয়ার করুন...

মেফতাহুল জান্নাত, সুন্দরগঞ্জ থেকেঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের অন্তত ৫০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকোটি এলাকার জনগণ নিজেদের অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করেছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নে খোর্দ্দা এলাকায় তিস্তার শাখা নদীর ওপর স্থানীয় জনগণ নিজ উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর আগে একটি বুড়াইল বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন; যা দুই বছর পর পর নতুন করে নির্মাণ করতে হয়। এই সাঁকোটি তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে সংস্কারও করে আসছেন।

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দা, চর খোর্দ্দা, লাঠশালা, বৈরাগী পাড়া, মন্ডলপাড়া গ্রাম ও কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজড়া এবং গুনাইগাছ ইউনিয়নের চরবিরহীম, সাধুয়া, দামারহাট, নাগড়াকুড়া, কালপানি, হুকাডাঙ্গা ও থেথরাই গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ বুড়াইল সাঁকো দিয়ে চলাচল করে। দুই উপজেলার মানুষের সেতু বন্ধনের একমাত্র ভরসা হচ্ছে এই বাঁশের সাঁকো। এছাড়া স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং দুই উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা প্রতিদিন চলাচল করে থাকেন সাঁকোর উপর দিয়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, লোকজন সাইকেল নিয়ে হেঁটে সাঁকো পার হচ্ছেন। সাবধানে চলাচল করছেন সবাই। কারণ, সাঁকোর দুই পাশে ধরনা না থাকায় একটু অন্যমনস্ক হলে যেকোনো সময় পড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এই সেতু দিয়ে চলাচলে এলাকার জনগণ নানা দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন। লাটশালা গ্রামের ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরিয়া এতগুলা গ্রামের মানুষ এই বাঁশের সেতু দিয়া চলাচল করি আসতোছে। রাইতের বেলা টর্চ দিয়া পা টিপি টিপি চলা লাগে। পড়ি যাবার ভয় থাকে।’

তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর সাঁকোটি মেরামত করতে হয়। তারাপুর ইউনিয়নে কমপক্ষে ১০টি স্থানে বাঁশের সাঁকো রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ হতে সাঁকোসমুহ মেরামত করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। তারপরও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় প্রতিবছর সাঁকোসমুহ মোরমত করা হয়ে থাকে। এ বছর মেরামত করতে না পারায় গত মঙ্গলবার এক ব্যক্তি মোটরসাইকেল নিয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে পার হতে গিয়ে সাঁকোর মাঝখানে যাওয়া মাত্র মোটরসাইকেলসহ পানিতে পড়ে আহত হয়।

উপজেলা প্রকৌশলী শামছুল আরেফীন জানান, যেখানে সাঁকো রয়েছে সেখানেই স্থায়ীভাবে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলেই ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আল-মারুফ জানান, প্রতিবছর বন্যায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সরকারিভাবে মেরামতের জন্য তেমন কোন বরাদ্দ পাওয়া যায় না। তারপরও বিভিন্নভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় বাঁশের সাঁকোসমুহ মেরামত করার কথা বলা হয়েছে


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.