বরিশালে বাঁশের মই দিয়ে উঠতে হয় ২৭ লাখ টাকার ব্রিজে !

আইন-অপরাধ আরো পরিবেশ বরিশাল সারাদেশ
শেয়ার করুন...

রাহাদ সুমন,বিশেষ প্রতিনিধি
২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু দিয়ে এলাকাবাসী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয় বাঁশের মই দিয়ে। এতে ভূক্তভোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হলেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। ফলে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বাশাইল এলাকার।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, নির্মিত সেতুর সাথে সংযোগ রাস্তা না থাকায় তারা ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর সুফল পাচ্ছেন না। বর্ষা মৌসুমে সেতুর নিচের অংশ পানির নিচে তলিয়ে থাকায় সেতু পারাপারে এলাকাবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া শুকনো মৌসুমে সেতুতে উঠতে হয় দুইপাশে থাকা মই দিয়ে।

ভূক্তভোগীরা আরও জানিয়েছেন-দীর্ঘদিন থেকে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মান না করায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে ওইসব এলাকার স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, প্রসূতিসহ অসুস্থ রোগী ও
বয়স্ক ব্যক্তিরা। মই দিয়ে সেতু পারাপারে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।

বাশাইল কলেজের ছাত্রী ফাতেমা আক্তারসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, মই বেয়ে সেতু পারাপার হতে আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। তারপরেও অন্যকোন উপায় না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হতে হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের গ্রামীণ রাস্তায় সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বাশাইল এলাকার ওয়পদা খালের ওপর বাশাইল কলেজের শিক্ষার্থীদের পারাপারের সুবিধার্থে ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬১৮ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়।

টেন্ডারের মাধ্যমে মুলাদী উপজেলার বান্দ রোডের মেসার্স পাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়ে ওইবছরের ৬ আগস্ট নির্মান কাজ শুরু করেন। সূত্রে আরও জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করেন।

স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন-সেতু নির্মানের ছয়মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও দুইপাশের এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নির্মিত এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে বাঁশের মই বেয়ে সেতু পারাপার হতে হচ্ছে। ফলে সরকারের ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।

ভূক্তভোগী এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তপেক্ষ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে মেসার্স পাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. বাদল হোসেন বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের নামে কাজ হলেও কাজ করছে অন্য একজনে। তিনি আরও বলেন-যারা সেতু নির্মানের কাজ করেছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করে এ্যাপোচ সড়ক নির্মানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহা বলেন, ওই সেতুর টেন্ডারটি আমি আসার পূর্বে হয়েছে। তারপরেও আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে যতোদ্রুত সম্ভব সেতুর এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের ব্যবস্থা করবো।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *