ভুরুঙ্গামারী সংবাদদাতাঃ
বন্যায় আমন ধানের বীজতলা নিয়ে চিন্তিত ভূরুঙ্গামারীর কৃষক
টানা বৃষ্টিতে আসন্ন রোপা আমন মৌসুমের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চরম হতাশায় পড়েছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কৃষকরা।
এ বছর কয়েক দফা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ইরি-বোরো মৌসুমে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বোরো চাষিরা। সেই ক্ষতিকে পুষিয়ে নিতে এবার আগাম রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন করেন কৃষকরা। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সে সব বীজতলা পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। কোন কোন কৃষক একাধিকবার আমন বীজ বপন করলেও তা নষ্ট হয়ে গেছে।
বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমন আবাদ নিয়ে চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার শিলখুড়ি, তিলাই, পাইকেরছড়া, চরভূরুঙ্গামারী ও আন্ধারিঝাড় ইউনিয়নের প্রায় ২২ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই সব গ্রামের কৃষকদের বীজতলার ধানের চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের কৃষক সামছুল হক জানায়, পাঁচ বিঘা জমিতে চারা লাগানোর জন্য বীজতলায় বীজ বপন করেছিলাম। যেসব চারা গজিয়েছিলো একটানা বৃষ্টিতে সেসব চারা পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। পানি না কমলে নতুন করে বীজতলা তৈরি করা সম্ভব না। এভাবে ফসল নষ্ট হয়ে গেলে আমরা কি খেয়ে বাঁচবো ভেবে পাচ্ছি না।
নলেয়া গ্রামের কৃষক মোরারক হোসেন জানায়, বীজতলার চারা টানা বৃষ্টিতে একবার নষ্ট হয়েছে। দ্বিতীয়বার লাগানো ধানের চারা পানির নিচে।
চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান, বলেন আমন বীজতলা তৈরি করেও বৃষ্টি আর বন্যার কারণে চারা বুনতে পারিনি। পানি কমলে পুনরায় জমি চাষ করে বীজতলা তৈরি করতে হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, আসন্ন রোপা আমন মৌসুমে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের ৮৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫১০ হেক্টর জমিতে কৃষক বীজতলা তৈরি করেছেন। টানা বৃষ্টি আর বন্যায় ৪৫ হেক্টর বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানায়, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কিছু বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানি নেমে গেলে আশা করি চারা দ্রুত রিকোভার হবে।