মিন্টু ইসলাম শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়া শেরপুরে মধুমাস জ্যৈষ্ঠের ২য় সপ্তাহের শুরুতে আগাম জাতের লিচু বাজারে চড়া দামে বিক্রি শুরু হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই রসালো এই ফল কিনতে আগ্রহের কমতি নেই ক্রেতাদের। তবে গতবারের চেয়ে এবার দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,,বগুড়া শেরপুর বাসস্ট্যান্ডের লিচু ব্যবসায়ী তন্ময় বলেন, দেশে চলমান তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে এবার লিচুর ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট হয়েছে। তা ছাড়া লিচু ফেটে যাওয়ার কারণে চায়না লিচুর দাম বেশি পড়েছে আমাদের কিনতে। তাই দাম চায়না থ্রি লিচু ১শত পিচ লিচুর দাম এক হাজার টাকা দরে বিক্রি করছি। আরেক লিচু ব্যবসায়ী অশোক সরকার জানিয়েছেন, মাত্র এক সপ্তাহ আগে মৌসুমি লিচু বগুড়ার শেরপুরের বাজারে আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন দুরদুরান্ত থেকে আসা এই লিচু পাকা কম ও আকারে ছোট কিন্তু মিস্টি বেশি। এছাড়াও রাজশাহী বা দিনাজপুরের লিচু এখনও বাজারে বেশি আসেনি। এই দুই জেলার ও রসালো লিচুর জন্য ক্রেতাদের আরও দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণত দিনাজপুরের লিচু স্বাদে ও মানে আলাদা। আর বাজারে আসার আগে বৃষ্টি পেলে এই লিচুর আকার বড় ও রং হবে সুন্দর। পাশাপাশি রসে ভরা থাকবে। সারাদেশেই এ লিচুর চাহিদা বেশি বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে রয়েছে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি ইত্যাদি। বগুড়ার শেরপুরের হাটখোলা, সকাল বাজার, শেরুয়া বাজার, মির্জাপুর বাজার ঘুরে লিচু বেচাকেনার এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এসময় বাসস্ট্যান্ডের ফল বিক্রেতা আবু হানিফ বলেন, প্রথমদিকে হওয়ায় বাজারে লিচুর দাম তুলনামূলক বেশি। তা ছাড়া এবার ফলন কম হওয়ার কারণেও দাম বেশি। গত বছর জ্যৈষ্ঠের শুরুতে যশোরের প্রতি ১শত পিচ লিচু ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার সেই লিচু বিক্রি করতে হচ্ছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আরেক লিচু ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, এবার দাম বেড়েছে লিচুর এজন্য পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। প্রতি ১শত পিছ লিচু ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় কেনা পড়ছে ফলে দাম বেশি এবার। দুবলাগাড়ি থেকে লিচু কিনতে আসা বাবলু প্রামাণিক বলেন, বছর ঘুরলেই লিচুর দাম বেড়ে যায়। এখানেও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজি আছে মনে হয়। ধুনট থেকে শেরপুরে লিচু কিনতে এসে ফেরত যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আকাশ আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি। ভেবেছিলাম ১০০ লিচু নেব বিক্রেতা দাম চেয়েছেন ৪৫০ টাকা। লিচুর জন্য এত টাকা খরচ করা সম্ভব নয় তাই লিচু ছাড়াই বাড়িতে যাচ্ছি। বাসস্ট্যান্ডের ফলপট্টির ব্যবসায়ী বেলাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জ্যৈষ্ঠের শুরুতে বাজারের সিংহভাগ লিচু যশোর ও নাটোরের লিচু এসেছে, এগুলো ভিন্ন জাতের। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজশাহী ও দিনাজপুরের পরিপুষ্ট রসালো লিচু পাওয়া যাবে। সেই লিচু লাল রসে টসটসে হয়। তবে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চায়না-থ্রি কিন্তু দাম বেশি। তবে এবার মৌসুমের শুরুর দিকে হওয়ায় লিচুর দাম কিছুটা বেশি। এখনও বাজারে সেভাবে লিচুর আমদানির জোগান আসা শুরু হয়নি। তাই তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে লিচুর ফলন কম হওয়ার প্রভাব বাজারে পড়েছে। তবে এখন দিন যত যাবে লিচুর আমদানি বাড়বে। ফলে মৌসুমী ফল লিচুর চাহিদা মতো দাম কিছুটা কম হতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।