বগুড়া শেরপুরে চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের লোকসান

আইন-অপরাধ আরো পরিবেশ রাজশাহী সারাদেশ
শেয়ার করুন...

মিন্টু ইসলাম শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুরে এবারো পানির দরে বিক্রি হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া। জানা গেছে, শেরপুরে পুরাতন চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। আড়ৎদাররা কুরবানির ঈদ আসলেই চামড়া কেনা বন্ধ রাখে, কারণ বন্ধ রাখতে পারলেই চামড়া বাজারে ধসে পরিণত হয়। এতে তারা পরে পানির দামে চামড়া কিনতে পারে।
এমনকি ক্রেতা না থাকায় গরুর চামড়ার সঙ্গে ফ্রি দেওয়া হয় ছাগলের চামড়া। কাঁচা চামড়ার আড়তদার চক্রের কারসাজিতে এই পানির দরে কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের দিন সোমবার সকালে কোরবানির পশু জবাই করার পর সেখানেই পড়ে থাকে পশুর চামড়া। এসব চামড়া কেনার জন্য কেউ যাননি। একপর্যায়ে বিকেলের দিকে ক্রেতা আসলেও কাঙ্খিত দাম পাননি। শহরের মোকছেদ আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, তিনি এবার ছাগল কোরবানি দেন। কিন্তু ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন। ক্রেতা না থাকায় দীর্ঘ সময় বাড়ির উঠানেই পড়ে থাকে ছাগলের চামড়াটি।
একপর্যায়ে মহাসড়কের পাশে ফেলে রেখে আসেন। পরে অবশ্য চামড়াটি কে বা কারা নিয়ে যায়। সাধুবাড়ী গ্রামের গোলাম রব্বানী বলেন, এক লাখ চুয়ান্ন হাজার টাকা দামের গরু কোরবানী দেন তিনি। কিন্তু সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চামড়া বিক্রি করতে পারেননি।
পরে সন্ধ্যার দিকে ক্রেতা ডেকে এনে তার কাছে ৬০০ টাকায় চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। সঙ্গে আরও তিনটি ছাগলের চামড়া ফ্রি দেওয়া হয় তাকে। মামুরশাহী গ্রামের আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, দুপুর পর্যন্ত যে গরুর চামড়ার দাম ৮০০টাকা বলা হয়, দুপুরের পর সেই চামড়া ৪০০-৫০০ টাকার বেশি কেউ বলেন না। আর ছাগল ও ভেড়ার চামড়ার কোনো ক্রেতাই ছিল না। তাই এসব চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই মাটিতে পুঁতে রাখেন। আবার অনেকে এতিমখানা সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসায় দিয়ে আসেন।
সোমবার (১৭জুন) সকাল থেকে পৌরশহরের একাধিক স্থানে চামড়া কিনতে বসেন ব্যবসায়ীরা। তবে সরকার নির্ধারিত এবং ন্যায্যমূল্যে চামড়া কেনেননি তারা। শামছুল হক নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে তার সংগ্রহ করা চামড়া কমদামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তার মতো মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লাভ তো দূরের কথা আসল টাকাও তুলতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন। চামড়া কিনতে বসা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, আড়ত থেকে নগদ টাকা পাওয়া যায়নি। তাই বেশি দামে চামড়া কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া বিগত বছরের চেয়ে এবার লবণের দাম ও শ্রমিক ব্যয় অনেক বেশি। এমন পরিস্থিতে চামড়ার দাম কম বলে জানান।
জানতে চাইলে শেরপুরের সবচেয়ে বড় চামড়া ব্যবসায়ী একেএম আসাদুজ্জামান বলেন, নগদ টাকার সংকটের কারণে অনেক ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিচ্ছেন না। বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা হয়তো বাড়তি লাভের আশায়, অথবা ভালো মানের চামড়ার সঙ্গে খারাপ মানের চামড়ার গড় করতে গিয়ে কম দামে চামড়া কিনছেন। এছাড়া ব্যবসায়ীদের আড়তে এখনো চামড়া কেনা শুরু হয়নি। তবে সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কেনা হবে বলে দাবি করেন তিনি।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *