মিন্টু ইসলাম শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শেরপুরে নীতিমালা লংঘণ করে একই গ্রামে নতুন করে আরেকটি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২২ মে) বিকালে শেরপুর মডেল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন উপজেলার মির্জাপুর দক্ষিণপাড়া মাদ্রাসার সুপার মো. আতাউর রহমান আকন্দ।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমাদের মির্জাপুর গ্রামের দ্বীনি প্রতিষ্ঠান মির্জাপুর দক্ষিণপাড়া দাখিল মাদ্রাসা নিয়ে একটি কুচক্রী মহল গভীর ষড়যন্ত্র করে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের পায়তারায় অবতীর্ণ হইয়াছে। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানটি বিগত ১৯৯৮ সালে একাডেমিক স্বীকৃতি পেয়ে ২০০০ সালে এমপিভুক্ত হয় পাশাপাশি একই গ্রামে ও একই মৌজায় আরেকটি মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা করার নামে একটি কুচক্রী মহল প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে ধর্ণা দিয়ে বর্তমানে উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানটির সাময়িক ক্ষতি সাধনের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, সরকারি বিধি মতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করারক্ষেত্রে কিছু নীতিমালা রয়েছে। তার মধ্যে জনসংখ্যা ও দূরত্বকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। যেমন যদি কোন গ্রামে একটি প্রতিষ্ঠান থাকে সেক্ষেত্রে একই গ্রামে আরও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে পারবে না। কেননা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দূরত্ব কমপক্ষে ৪ (চার) কিলোমিটার হওয়া সরকারি বিধান। একই গ্রামে একই মৌজায় অন্য একটি মাদ্রাসা হওয়া সম্ভব নয় বলে তৎকালীন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছদরুল আলম গত ১৪/০৭/১৯৯৮ সালে সরেজমিনে তদন্ত করে মির্জাপুর দক্ষিণপাড়া দাখিল মাদ্রাসা ও মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসার দূরত্ব ১/৪ ( কোয়ার্টার) কিলোমিটার উল্লেখ করে উপ পরিচালক মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহী বরাবরে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। একই সমস্যা নিয়ে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (এফএসএসপি) স্মারক নং এফএসএসপি/ শের/বগুড়া/২০০১/১২৫ তাং ২১/১০/২০০১ কে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে একটি দূরত্ব প্রতিবেদনে অর্ধ কিলোমিটারের কম উল্লেখ করেছেন। অপরদিকে উল্লেখিত সমস্যা নিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড পরিদর্শক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ও উপ পরিদর্শক কেএম বদরুদ্দোজা উল্লেখিত মাদ্রাসা ২টি পরিদর্শন করে স্মারক নং ২৫৪১/টি/৩/৪ (৪), ০৬/০৫/১৯৯৯ সালে প্রতিবেদনে পায়ে হেঁটে ১ কিলোমিটারের কম দূরত্ব উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া ২টি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজ গত ১০/১০/২০০৫ ইং একটি ডিও লেটারে দূরত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড এর চেয়ারম্যানের বরাবরে একটি চিঠি প্রদান করেছেন। অপরদিকে ওই মাদ্রাসা দুটির দূরত্ব ও জনসংখ্যা সমস্যা নিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিবর রহমান সাহেব গত ২৫/০৪/২০০৯ তারিখে চেয়ারম্যান মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বরাবরে ডিও লেটারে উল্লেখ করেন ১/৪ ( কোয়ার্টার) কি.মির মধ্যে আরেকটি নতুন ভাবে মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাহা প্রতিষ্ঠান হইলে পুর্বের মাদ্রাসাটির ক্ষতি সাধিত হবে।
তিনি বলেন, মাদ্রাসাটি ক্ষতিগ্রস্ত করিবার জন্য স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রী স্বার্থান্বেষী কতিপয় ব্যক্তি তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা নামে ভুয়া জমির দলিল সৃষ্টি করে সরকারি নীতিমালা লংঘন করিয়া একই গ্রামে একই মৌজায় নতুন মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসার নামে ভুয়া কাগজপত্র দেখাইয়া শিক্ষামন্ত্রণালয় হইতে যে কোন মুল্যে এমপিও ভুক্ত করার জোর চেষ্টা চালাইতেছে। উক্ত মাদ্রাসাটির ব্যাপারে জনসংখ্যার প্রাপ্যতা ও কিলোমিটার দূরুত্ব নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সরকারি বিধি মোতাবেক নতুন মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসার জনসংখ্যার প্রাপ্যতা নাই। ১/৪ ( কোয়ার্টার) কি.মি এর মধ্যে নতুন মাদ্রাসা স্থাপন করা মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নীতিমালা বর্হিভুত। সরকারি নীতিমালা মোতাবেক শিক্ষক নিয়োগ নাই। মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসায় বিগত এবং চলতি বছরে বিভিন্ন সালের এসএসসি ও দাখিল পাশ করা শিক্ষার্থীদের নাম দেখিয়ে নতুন করে রেজিষ্ট্রেশন করে তাদেরকে দিয়ে বারবার পরীক্ষা দেয়ানো হয়। বাস্তবে তাদের নিয়মিত কোন ছাত্রছাত্রী নেই।
তিনি আরো বলেন, উল্লেখিত বিষয়গুলি বিবেচনা ও সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন এবং সরকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এমপিওভুক্ত কমিটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসার এমপিওভুক্ত করার যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।