ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন, পানি বিপৎসীমার ১৩৭ সে.মি. ওপরে

আরো চট্টগ্রাম জাতীয় পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত দশটি স্থান ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো মানুষ।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের মধ্যম ধনীকুন্ডা, নোয়াপুর, শালধর এলাকায় তিনটি, ফুলগাজী উপজেলার দেড়পাড়ায় দুইটি, নাপিত কোনায় একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া সিলোনিয়া নদীর মির্জানগর ইউনিয়নের পশ্চিম গদানগর, জঙ্গলঘোনা, উত্তর মনিপুর দাসপাড়া ও মেলাঘর কবরস্থানের পাশে চারটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্তত ১৫ গ্রামের হাজারো মানুষ।

সানজিদা আক্তার নামে শহরের একাডেমি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, গত বছর বন্যার পানিতে বাসার নিচ তলিয়ে যায়। কিন্তু এবারই প্রথম বৃষ্টির পানিতে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। এর আগে শুধুমাত্র বৃষ্টিতে এমন চিত্র কখনো দেখা যায়নি। কিছু জিনিসপত্র সরাতে পারলেও খাবার ও সুপেয় পানি নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

রাশেদুল ইসলাম নামে পরশুরামের মনিপুর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, গেল বছরে বল্লামুখা বাঁধের ভাঙন স্থলের একটি স্থানে এখনো মেরামত কাজ শেষ হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকদের গাফেলতির কারণে এমন হয়েছে। সেই জায়গা দিয়ে আজ আবারও পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে না আনলে প্রতিবছরই এমন ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত পাঁচটি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। আরও খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানব। মাঠপর্যায়ে আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে টানা বর্ষণে ফেনী শহরের ডাক্তারপাড়া, শহীদ শহিদুল্লা কায়সার সড়ক, পুরাতন রেজিস্ট্রি অফিস, শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠানবাড়ি, নাজির রোড, মিজান রোড, একাডেমি, সদর হাসপাতাল মোড় ও পেট্রোবাংলাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার নিচু সড়কগুলো। দোকানপাটে পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মালপত্র। তবে বিকেল থেকে এ পানি ধীরগতিতে নামতে শুরু করেছে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, জেলায় টানা দুই দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিগত কয়েক বছরে সর্বোচ্চ। আগামী ২-৩ দিন জেলাজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, দুপুরে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোর বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *