ফার্মেসি থেকে নারীর ৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

আইন-অপরাধ জাতীয় পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

অনলাইন ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ফার্মেসি থেকে শাহনাজ পারভীন জোৎস্নার (৩৫) ছয় টুকরা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
গ্রেপ্তাররা হলেন, ওই ফার্মেসির মালিক এবং যাদব চন্দ্র গোপের ছেলে জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), কিশোরগঞ্জের ইটনার মৃত রসময় চন্দ্র গোপের ছেলে অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের পতিত পাবন গোপের ছেলে অসীত গোপ (৩৬)।
রাজধানীর ভাটারার নুরের চালা এলাকা থেকে জিতেশকে এবং জগন্নাথপুর পৌর এলাকা থেকে অনজিৎ ও অসীতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৭ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথপুরের আবদুল মতিন মার্কেটের অভি মেডিকেল হল নামে একটি ফার্মেসি থেকে শাহনাজ পারভীনের ছয় টুকরা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি জগন্নাথপুরের নারকেলতলা গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী ছরকু মিয়ার স্ত্রী।
এরপর ওইদিনই জিতেশ চন্দ্র গোপের নাম উল্লেখ করে জগন্নাথপুর থানায় একটি মামলা করেন শাহনাজ পারভীনের ভাই হেলাল আহমদ।
সিআইডির ভাষ্য, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার করা আসামিরা স্বীকার করেছেন, ২০১৩ সাল থেকে জগন্নাথপুর পৌর এলাকায় নিজ মালিকানাধীন বাসায় দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন শাহনাজ পারভীন। তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব থাকেন। পরিবারের সব সদস্যের ওষুধ জিতেশের মালিকানাধীন অভি মেডিকেল হল ফার্মেসি থেকে কেনার সুবাদে জিতেশের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভুক্তভোগী কিছুদিন ধরে গোপনীয় শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। এ জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জিতেশের ফার্মেসিতে এলে শাহনাজ পারভীনকে ফার্মেসির ভেতরে প্রাথমিক চিকিৎসাকক্ষে বসিয়ে রাখা হয়। ভিড় কমলে তার সঙ্গে কথা বলে ওষুধ দেওয়া হবে বলে সময়ক্ষেপণ করা হয়।
এদিকে জিতেশ তার বন্ধু মুদি দোকানদার অনজিৎ ও পাশের অরূপ ফার্মেসির মালিক অসীতকে ফার্মেসিতে অপেক্ষায় রাখা শাহনাজ পারভীনের বিষয়ে বললে তারা তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক জিতেশ শাহনাজ পারভীনকে চিকিৎসার কথা বলে ঘুমের ওষুধ দেন এবং তা খাওয়ার পর সেখানেই ঘুমিয়ে যান তিনি। তাকে ফার্মেসির ভেতর রেখেই তালা দিয়ে চলে যান জিতেশ।
সিআইডি আরও জানায়, সব দোকান বন্ধ হলে এবং রাত আরও গভীর হলে তারা পুনরায় তালাবদ্ধ ফার্মেসি খুলে ভেতরে এনার্জি ড্রিংকস পান করেন। এরপর তারা ভিকটিমকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের বিষয়টি শাহনাজ পারভীন প্রকাশ করার কথা বললে আসামিরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
তারা ভুক্তভোগীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে এবং বিশ্রামকক্ষে থাকা বালিশ দিয়ে মুখে চেপে ধরে হত্যা করেন। এরপর ধারালো ছুরি দিয়ে মাথা, দুই হাত, দুই পা এবং বুক-পেটসহ ছয়টি অংশে বিভক্ত করেন মরদেহটি। দোকানে থাকা ওষুধের কার্টুন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে ফার্মেসি তালা দিয়ে চলে যান তারা। সুবিধাজনক সময়ে মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো মাছের খামারে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.