রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া (বরিশাল) সংবাদদাতাঃ বরিশালের উজিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় নিহতদের মধ্যে ৭ জন ও আহত ১১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজন নারী ও এক শিশু রয়েছে। নিহতরা হলেন- পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর ভেটকি এলাকার মো. কুদ্দুস আকনের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম আকন (৩৫), একই এলাকার রাকিব আকনের স্ত্রী তাজনেয়ারা বেগম (২৩), বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজীরাবাদ এলাকার মোবারক আলী বেপারীর ছেলে মো. হালিম মিয়া (৩১), ফরিদপুরের নগরকান্দা সুতারকান্দা এলাকার আওলাদ আলী মোল্লার ছেলে মো. সেন্টু মোল্লা (৫০), বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরকাঠি এলাকার মৃত আবুল কাশেম হাওলাদারের ছেলে মো. রমজান হাওলাদার (৩৮), ঝালকাঠি সদরের নেয়রি এলাকার মো. মনির হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন (৯) ও উজিরপুরের মুন্ডুপাশা এলাকার মৃত মনোরঞ্জন শীলের ছেলে মাধব শীল (৪৬)।
অপরদিকে দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ঝালকাঠির কাঠালিয়া এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে মো. সোহেল (৩৫), পিরোজপুরের নেছারাবাদ এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে মো. সেলিম মিয়া (৪০), একই এলাকার সুখরঞ্জনের ছেলে কালু (৩৬), উজিরপুরের শিকারপুর এলাকার মাধব শীলের ছেলে অনিক ১৬), নগরীর সদর রোড এলাকার খবির আহম্মেদের ছেলে মো. লিটন (৩৪), একই এলাকার দুলাল দাসের ছেলে মিলন দাস (৩০), বরিশাল নগরীর কালুশাহ এলাকার শাহ আলমের মেয়ে লতা (৩৩), আমানতগঞ্জ এলাকার বজলুর রহমানের স্ত্রী হালিমা বেগম (৮০), বরগুনার আমতলী এলাকার জিয়াউর রহমানের মেয়ে আসমা আক্তার (২০), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া এলাকার তৈয়ব আলীর স্ত্রী জেসমিন ও একই এলাকার মো. ফোরকানের মেয়ে সীমা আক্তারের নাম-ঠিকানা জানা গেছে। বাকি হতাহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
উজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আর্শাদ জানান, নিহত ১০ জনের মধ্যে সাত জনের নাম-ঠিকানা জানা গেছে। হতাহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ২৯ মে রবিবার ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুর উপজেলার সানুহার এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কায় ১০ জন নিহত হয়েছে। এ সময় আহত আরও ১৯ জন উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ অনুন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে এ দুর্ঘটনায় গাড়ির বেপরোয়া গতি ও ক্লান্তির কারণে চালকের ঘুমিয়ে পড়েছিল বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দুলাল উদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বাস চলন্ত অবস্থায় চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
তাছাড়া ওই সময় গাড়ির গতিও ছিল বেপরোয়া। আর বাসটি ঢাকা থেকে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। দীর্ঘ পথ গাড়ি চালানোর কারণে চালক হয়ত ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেছেন, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দাখিল করবে। এছাড়াও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, বিভাগীয় কমিশনার স্যার হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছেন এবং নিহতদের দাফনে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা ঘোষণা দিয়েছেন।