স্টাফ রিপোর্টারঃ কুমিল্লা সদর হতে প্রবাসে থাকার আড়ালে দেশে মাদক ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়া চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেছে কুমিল্লা র্যাব-১১,সিপিসি-২ সদস্যরা। এ সময় বিপুল ২৭ হাজার ৮৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ অন্যান্য মাদক উদ্ধার করা হয়।
র্যাব সূত্র জানায়, কুমিল্লা সদরের বাখরাবাদ গ্রামের কয়েকটি পরিবারের সদস্য সৌদি আরবে চাকুরী বা ব্যবসা করার পাশাপাশি তারা বিভিন্ন সময়ে দেশে এসে বড় পরিসরে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে। দেশে স্বল্প সময়ের জন্য এসে মাদকের বড় ধরনের চালানের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে পুনরায় তারা প্রবাসে পাড়ি জমায়। উক্ত তথ্য পাওয়ার পর থেকেই আমরা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে থাকি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি যে, বাখরাবাদ গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে মোঃ এমদাদুল হক (৪০) ও তার ভাই মোঃ লিটন (৩২) চলতি বছরের আগস্ট মাসের প্রথম দিকে ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি বড় চালান বিক্রয় করে মোঃ লিটন (৩২) দু-এক দিনের মধ্যে সৌদি আরবে পাড়ি জমাবে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, শনিবার দুপুরে বাখরাবাদ এবং ধনুয়াখোলা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ মোঃ এমদাদুল হক (৪০) ও মোঃ আবু কাউছার (২৬) সহ তাদের ০৪ জন সহযোগীকে হাতে নাতে আটক করে।
আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন বাখরাবাদ গ্রামের মৃত. রুস্তম আলীর ছেলে মোঃ এমদাদুল হক (৪০), একই গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে মোঃ আবু কাউছার (২৬), ধনুয়াখোলা গ্রামের মোঃ মোবারক হোসেনের ছেলে মোঃ তৌহিদুল ইসলাম (২৮), ধনুয়াখোলা গ্রামের মোঃ নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ জাকারিয়া (২৭), ধনুয়াখোলা গ্রামের তাজুল ইসলাম এর ছেলে মোঃ আলাউদ্দিন (২৭) ও সদরের বড়দৌল গ্রামের মৃত আব্বাছ আলীর ছেলে এবং মোঃ এমদাদুল হকের শ্বশুর আব্দুল মতিন (৬২)।
উক্ত অভিযানে তাদের নিকট থেকে সর্বমোট ২৭ হাজার ৮৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২ বোতল ফেন্সিডিল, ১ বোতল বিদেশী মদ, ২ কেজি গাঁজা ও মাদক বিক্রয়ের নগদ ১ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আটককৃত আসামী মোঃ এমদাদুল হক ও মোঃ আবু কাউছার একই পরিবারের সদস্য এবং সম্পর্কে একে অপরের আপন ভাই। মোঃ এমদাদুল হক ও মোঃ আবু কাউছারসহ তাদের চার ভাই মোঃ জলিল, মোঃ খলিল, মোঃ লিটন ও মোঃ খোকন প্রত্যেকেই পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। এই পরিবারের সদস্যরা সৌদি প্রবাসে থাকে এবং তারা স্বল্প সময়ের ছুটিতে বাংলাদেশে আসে। তারা প্রবাসে থাকার কারণে এলাকার কেউ সন্দেহ না করার সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাদক ব্যবসার ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে পুনরায় সৌদি আরবে পাড়ি জমায়। আটককৃত অন্যান্য আসামীরা এই চক্রটির সাথে সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেন্সিডিল, বিদেশী মদ ও গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছিল বলে স্বীকার করে।
এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পর্দার আড়ালে থাকা এ সমস্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অতি শীঘ্রই আরো কিছু অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান র্যাব-১১, সিপিসি-২, এর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন।