স্টাফ রিপোর্টার,কুমিল্লাঃ
কুমিল্লার চান্দিনা শান্তিনগর এলাকায় জাপান প্রবাসী মাহবুব আলম মামুন এর বিরুদ্ধে যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করে জাপান প্রবাসীর পরিবার। গত ১৭ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে
জাপান প্রবাসী মাহবুব আলম মামুন এর বাড়িতে গেলে তার জামাইয়ের নির্দেশে তাঁর বড় বোন হাছিনা বেগম ও বোনের জামাই কালাম ও শাশুড়ী জোসনা বেগম এবং বড় ভাই নাজমুল হাসান ও শশুর মোহাম্মদ আলী মিলে যৌতুকের দশ লাখ টাকা না পেয়ে স্ত্রী পলিকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে পূর্বের একাধিক বিয়ে গোপন রেখে তৃতীয় বিয়ে করার অভিযোগ করেন তৃতীয় বউ সায়কা আক্তার পলি। এসব বিষয়গুলো নিয়ে জামাইয়ের কাছে জানতে চাওয়ায় জাপান প্রবাসী মাহবুব আলম মামুন এর পরিবারের সদস্যদের দিয়ে তাঁর ওপর নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেছেন। জাপান প্রবাসী মামুন এর নির্দেশে এ ঘটনা ঘটেছে।গত ১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২ নং আলাদতে সায়কা আক্তার পলি উপস্থিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী নারীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার খিরাকান্দি এলাকার মোহাম্মদ আলী এর দ্বিতীয় ছেলে জাপান প্রবাসী মাহবুব আলম মামুন এর সঙ্গে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সায়কা আক্তার পলির সাথে পারিবারিক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।বিয়ের সময় মেয়ের পক্ষ থেকে হাতে,কানে ও গলায়সহ সাড়ে পাঁচ ভরি স্বর্ণালাংকার ও খাট, আলমারি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন মুল্যবান উপহার সামগ্রী দিয়ে বিবাহ দেন। বিয়ের পূর্বে কথা ছিল বিয়ের পর তাঁর স্ত্রীকে জাপান নিয়ে যাবে।ছেলের পক্ষ জানান ছেলের ছুটি আছে ১৫/২০ দিন।তারা জানান ছেলের পরিবার তরিগরি করে বিবাহ সম্পন্ন করা জন্য মেয়ের পরিবারকে তাগাদা দিচ্ছেন।এরপর মেয়ের পক্ষ থেকে বিবাহের কথা ছেলের পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা হয়।বর পক্ষ থেকে বিয়ের বিষয়ে একশত বরযাত্রী নিয়ে মহানগরীর রানীরবাজার ফাইন্ড কমিউনিটি সেন্টারে উভয় পক্ষের আত্মীয় স্বজনের উপস্থিততে মুসলিম ধর্মের বিধান অনুসারে বিবাহ সম্পন্ন হয়।এরপর ছেলের বাড়িতে নিয়ে যায় নতুন বউ। বিয়ের সময় ছেলের পক্ষে কথা ছিলো তার সাথে তার সহধর্মিণীকে জাপান নিয়ে যাওয়ার। এবার ছেলে ছুটিতে এসে নতুন বাড়ির কাজ করে হাত খালি বলে মেয়ের পক্ষকে জানান ছেলের পরিবার।মেয়ের পরিবার তার মেয়ের সুখের আশায় এবং মেয়েকে জাপান নিয়ে যাবে বলে এই আশায় পাঁচ লাখ টাকা হাওলাত হিসেবে ছেলের পক্ষকে দেন। তখন ছেলে তরিগরি করে বিয়ের কাবিননামা উঠিয়ে ইংরেজিতে করার জন্য বলে এবং তার স্ত্রীর পাসপোর্ট করবার জন্য মেয়ের পক্ষকে দেখান।জামাই নতুন বউকে জাপান তার সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাস্ত দেখান। বিয়ের ১৮ দিন পর ছেলে একা জাপান চলে গেলেন।তার বউকে বুঝিয়ে জান কিছুদিনের মধ্যে তোমাকে জাপান নিয়ে যাবো।এরপর মেয়ের পক্ষ জানতে পারে সব ছিলো নাটক। রপর থেকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে খারাপ ব্যবহার করে জামাই মামুন। পূর্বের বিয়েগুলো গোপন রাখেন জাপান প্রবাসী।এ বিষয় জানতে চাইলে উল্টো হুমকি দেন তাকে তালাক দিবে। এরপর থেকে ছেলের পরিবার সদস্যরা সায়কা আক্তার পলির কাছে যৌতুক হিসেবে দশ লাখ টাকা দাবি করে আসছেন। টাকা দিতে না পারায় জাপান প্রবাসী মাহবুব আলম মামুন এর নির্দেশে তাঁর পরিবার সদস্য তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন এবং মানসিকভাবে হেনস্তা করতেন। সম্প্রতি মামুন এর পরিবার সদস্য মামুন এর স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে দশ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। কিন্তু স্ত্রী এতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। মামুন এর প্রথম স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য তার পরিবার নির্যাতন করতো। পরে প্রথম বউ চলে গেলে দ্বিতীয় বিয়ে করে ওই বউ বিনাচিকিৎসার মারা যান। এ-সব কথা গোপন রেখে গত ২ নভেম্বর কুমিল্লা রানীর বাজার এলাকার এক নারীকে বিয়ে করেন।১৫/২০ দিন পরে জানতে পারে প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রীর বিষয়গুলো।এসব বিষয় জানতে চাইলে একপর্যায়ে মামুন এর নির্দেশে তার পরিবার সদস্য মিলে তার স্ত্রী সায়কা আক্তার পলি কে বেধড়ক মারধর ও নির্যাতন করে হত্যার চেষ্টা করে পরে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। পরে বাবার বাড়িতে এসে তাঁর নিজস্ব পরিবারের লোকজন তাঁকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী নারী সায়কা আক্তার পলি সাংবাদিককে বলেন, ‘আমার স্বামীর চাহিদামতো যৌতুকের দশ লাখ টাকা দিতে না পারায় আমার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। পূর্বে প্রথম ও দ্বিতীয় বউয়ের বিষয়গুলো গোপন রেখে আমাকে বিয়ে করে এসব কথা জেনে যাওয়ার পর আমাকে বিয়ে করার পূর্বে কথা ছিলো তার সাথে আমাকে জাপান নিয়ে যাওয়ার।এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তালাক ও মেরে ফেলার হুমকি দেন। একাধিক বিয়ের বিষয়গুলোর জানতে চাইলে আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করে জাপান প্রবাসীর পরিবারেরসদস্যরা।আমার স্বামীর নির্দেশে আমার ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেন তাঁর পরিবার। নিরুপায় হয়ে এখন কুমিল্লার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২ নং আলাদতে কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।