মোঃ আতিকুর রহমান, সুনামগঞ্জঃ
.আজ শনিবার সকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখা কর্তৃক শহরের নতুন শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে কোভিডে আক্রান্তদের সেবায় ২০টি অক্রিজেন সিলিন্ডার হস্তান্তরের উদ্বোধন পরবর্তী সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দিপংঙ্কর কান্তি দে’র সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক আশিকুর রহমান রিপনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান। মন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর এই সময়ে দেশকে রক্ষায় জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দিনরাত কাজ করে চলেছে। সরকারের আর্থিক সক্ষমতা যা কিছু আছে সবকিছু নিয়ে স্বাস্থ্যসেবায় কাজে লাগানো হচ্ছে। আমাদের সরকার প্রধানের প্রথম কাজ হচ্ছে এই করোনাকালীন সময়ে দেশের মানুষের জীবন রক্ষা করা। তিনি বলেন, এই কাজটি শেখ হাসিনার একার পক্ষে করা সম্ভব নয় । এই সময়ে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে করোনা মোকাবেলায় কাজ করতে হবে । তিনি দেশের বিত্তবানদেরকে মানুষজনের কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।।
মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলদেশ ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহি সংগঠন। ১৯৪৮ সালের ৪টা জানুয়ারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের যেকোন ক্রান্তিকাল ও দূর্যোগে দেশের মানুষের পাশে দাড়িঁয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এই করোনাকালীন সময়ে কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের সেবায় সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীরা যেভাবে জেলা সদর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায় ২০টি অকিজেন সিলিন্ডার প্রদান করছেন এটা একটি বিশাল কাজ। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও সরকারের সহযোগিতার কথা জানান। তিনি বলেন, আমি সুনামগঞ্জের সন্তান, আমার বাড়ি এই জেলায়, কাজেই জেলা শহরে আমার আরো বেশী বেশী আসা প্রয়োজন। তিনি কারো বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই উল্লেখ করে বলেন,আমার এখন যাবার সময় এসে গেছে,আমার কোন নিজস্ব ঘরবাড়িও নেই ,আমার এই দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে সম্পৃত্ত,আমার কবরও এই জেলার শান্তিগঞ্জে হবে সেই ব্যবস্থাটা ও করে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে আমার সন্তানেরা হয়তো কোনদিন এই দেশে আসবেনা, কেননা যেহেতু তারা প্রবাসে স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেছে। আমার লাইন শেষ, আমার এখানে কোন স্বার্থ নেই দাবী করে তিনি আরো বলেন,সমস্ত সুনামগঞ্জেই আমার বাড়িঘর,ঢাকায় আমি সব সময় বলে থাকি যে, সুনামগঞ্জের জেলা শহরে আমার বাড়ি। কিন্তু কিছু মানুষ অহেতুক মিথ্যা সমালোচনা করে উন্নয়ন কাজে বাধার সৃষ্টি করেন।
শোকের এই মাসে স্বাধীনতা বিরোধী একটি অপশক্তি ও কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যরা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট স্বাধীন বাংলার স্থপতি হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,তার সহধর্মিনী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ তাদের সন্তান ও স্বজনদের হত্যা করেছিল। তারা ভেবেছিল শেখ মুজিবকে হত্যা করে এদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দিবে। কিন্তু স্বাধীনতার দীর্ঘ একুশ বছর পরে হলেও দেশের আপামর জনগনের রায় নিয়ে বিপুল ভোটে তার সুযোগ্য উত্তরসূরী গনতন্ত্রের মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় অধিষ্টিত হয়ে তিনযুগের বেশী সময় ধরে রাষ্ট্র পরিচালনা করে জাতির পিতার সকল খুনীদের বিচারের রায় কার্যকর করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ শত প্রতিকূলতা আর ষড়যন্ত্র অতিক্রম করে বিশ্বের দরবারে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে পরিচিত। বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনার শাসনামলকে অনুসরণ ও অনুকরণ করছেন বলে মন্ত্রী আব্দুল মান্নান দাবী করেন।
তিনি সরকারী চাকুরী জীবনে বৃহত্তর ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক থাকাকালীন সময়ে সেই অঞ্চলের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে আরো বলেন,আমরা প্রতিহিংস্রার রাজনীতি করতে চাই না। যে কয়দিন বাচঁবো সকল ভেদাভেদের উধের্ব থেকে এই সুনামগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে সবার সম্মিলিত প্রয়াসে উন্নয়ন কর্মকান্ড ছড়িয়ে দিতে চাই। এজন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে সহযোগিতা করার আহবান জানান মন্ত্রী এম এ মান্নান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন,পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. মো.শামস উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান শাহারীয়ার, সদর সার্কেল মো. জয়নাল আবেদীন, পরিকল্পনামন্ত্রীর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক সচিব মো. আবুল হাসনাত, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহীদুর রহমান, সুনামগঞ্জ জজকোর্টের এপিপি(সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর) এ্যাডভোকেট দেবাংশু শেখর দাস,জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি লিকন আহমেদ, কাউসার আহমদ, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন ও জগৎজ্যোতি রায় প্রমুখ।