মোঃ আতিকুর রহমান, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ-
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে গত বৃহস্পতিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিখ্যাত তাহিরপুরের সকল পর্যটন কেন্দ্র।এর পর থেকেই পর্যটকদের পদভারে মুখরিত তাহিরপুরের জাদুকাটা নদী, বারেকটিলা, হাওলি জমিদার বাড়ির ধবংশাবশেষ, জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান, রাজাই ঝর্ণাধারা, টেকেরঘাট শহীদ সিরাজ লেক, লাকমাছড়া, লালঘাট ঝর্ণাধারা, টেকেরঘাট স্কুল ঝর্ণাধারাসহ মাদার হেরিটেজ প্রকল্প টাঙ্গুয়ার হাওড়। এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্রে চলাফেরা করার কথা থাকলেও তা মানছেনা আগত পর্যটকরা। তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংসহ নানামুখি প্রচার প্রচারনা চালানো হলেও তার কোন তোয়াক্কাই করছেনা কেউ।
সরেজমিনে পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা যায়,দলে দলে ইঞ্জিন চালিত নৌকা, স্পীডবোট, মোটর সাইকেল নিয়ে এই সব পর্যটন স্পষ্টগুলোতে ঘুরতে আসছেন দেশ-বিদেশের প্রকৃতি প্রেমীরা। কিন্তু কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অবাধে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন তারা। কারো মুখেই নেই মাস্ক, হাত ধোয়ার জন্যও নেই কোন ব্যবস্থা বা জীবানুনাশক হ্যান্ড সেনিটাইজার।এতে করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছেন এলাকাবাসী। তাছাড়া পর্যটকদের ভাড়ায় আনীত নৌকাগুলোতে উচ্চস্বরে লাউড স্পিকার বাজানোর কারনে নৌকাঘাটের পাশে অবস্থিত মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের নামাজে বিঘœ ঘটছে অপরদিকে মারাতœক শব্দ দূষনে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।তাই প্রশাসনকে আরো কঠোর হবার আহ্বান জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর কারণে গেল কয়েক মাস সারা দেশের ন্যায় তাহিরপুর উপজেলার নয়নাভিরাম এলাকাগুলোতে পর্যকটদের আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল উপজেলা প্রশাসন। এ সময়টিতে পর্যটন স্পটগুলো ছিলো পর্যটক শূন্য।
টাংগুয়ার হাওর তীরবর্তি জয়পুর গ্রামের স্থানীয়রা জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের শুরুর দিকে প্রশাসন যেভাবে কঠোর অবস্থানে ছিল সেভাবে যদি আবার কঠোর না হয় তাহলে আমরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ব। কারণ কার মধ্যে করোনা আছে সেটা তো বোঝা মুশকিল। আর এখানে আসার পর দেখেছি কেউ মাস্ক বা সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করছেন না।
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া একটি পর্যটক দলের শরিফুল ইসলাম আকন্দ জানান, আনন্দ উপভোগ করতে সবাই মিলে নৌকাযোগে হাওরে এসেছি। একদিনে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। আমরা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এসেছি।
তাহিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ আবু আহম্মদ শাফী জানান, করোনার টিকা দেয়া হলেও সবাইকে সর্তকতা অবলম্বন করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নাহলে সামনে বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান কবির জানান,উপজেলায় পর্যটক আসা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা সংক্রান্ত যাবতীয় বিধিনিষেধ পালন করার জন্য ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছি।পাশাপাশি উচ্চস্বরে গান না বাজানোর জন্য সকল পর্যটকবাহী নৌকাকে বলা হয়েছে। যারা এই বিধিনিষেধ মানবেনা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।স্বাস্থ্য বিধিসহ সকল নিয়ম-কানুন মেনে চলার জন্য পর্যটন এলাকায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করব।