পটুয়াখালী হাসপাতালে ‘সিন্ডিকেটের রামরাজত্ব’, ডেঙ্গুতে মৃত্যুতে প্রতিবাদ — কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

আইন-অপরাধ আরো খুলনা পরিবেশ বরিশাল সারাদেশ
শেয়ার করুন...

মোঃ নাসির উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার, পটুয়াখালী
পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালকে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চরম শিকার বলে আখ্যায়িত করে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ‘পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’। একই সঙ্গে তারা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা, ডেঙ্গু প্রতিরোধ, ও নগর অবকাঠামো সংস্কারের দাবিও জানিয়েছে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে শহরের মল্লিকা রেস্তোরাঁ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আন নাহিয়ান এসব দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ২০ লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল এ হাসপাতালটি বর্তমানে একটি ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেটের’ কবলে পড়েছে। চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি, অ্যাম্বুলেন্স-টিকিট সিন্ডিকেট, টেস্ট বাণিজ্য, সরকারি অর্থ লুটপাট এবং হাসপাতালের ভয়াবহ অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে সাধারণ রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, “পরিচালক ও অধ্যক্ষ দায়িত্বে থাকলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে একজন প্রভাবশালী ডাক্তারের নেতৃত্বে গঠিত সিন্ডিকেটের হাতে। তারা হাসপাতালে রামরাজত্ব কায়েম করেছে।”

ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সিন্ডিকেট ভেঙে হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে ১৮ নভেম্বর রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, শহরের খাল দখল ও অচল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ স্থবির পানি ডেঙ্গুর লার্ভার জন্ম দিচ্ছে। চলতি বছরে জেলায় পাঁচ শতাধিক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং দুইজনের মৃত্যু (এসএসসি পাস করা ছাত্র মোহাম্মদ ফয়জুল করিম হিমেল ও সাংবাদিক সঞ্জয় কুমার লিটু দাসের স্ত্রী) ঘটেছে।

সংগঠনটি আরও দাবি জানায়—

খাল উদ্ধার ও পুনঃখনন,

আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্থাপন,

নোংরা পানি সরবরাহ বন্ধে পাইপলাইন সংস্কার,

ঝাউতলায় আধুনিক মসজিদ নির্মাণ,

বেহাল বাসস্ট্যান্ড ও শহরের প্রধান সড়ক, স্লুইসগেট ও কালভার্ট সংস্কার,

চৌরাস্তা থেকে পায়রাকুঞ্জ সড়ক চার লেনে উন্নীত করা,

এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য মন্দির নির্মাণ।

শেষে চেয়ারম্যান নাহিয়ান হুঁশিয়ারি দেন, “আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দাবিগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে জনস্বার্থে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।”


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *