স্বাস্থ কমপ্লেক্সে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে ৩৬টি;
করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে বেড মাত্র ১৯টি
জাবেদ তালুকদার, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে : দেশে আবারও হানা দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। নমুনা পরীক্ষা হলে প্রতিদিনই একাধিক করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে নবীগঞ্জে। এদিকে শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকারী ভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ৩ জন হলেও করোনা উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত শতাধিক লোক মৃত্যুবরণ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নবীগঞ্জে ২ হাজার ৪ শত ১১ জন ব্যাক্তির নমুনা পরীক্ষা করে ৫৪২ জন ব্যাক্তির দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে এবং ৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ২৯৯ জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ও ১০ জন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং বাকিরা হোম কোয়ারেন্টাইনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে নবীগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত মহামারি করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে কমপক্ষে শতাধিক নারী-পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিনই করোনা উপসর্গ নিয়ে ২-৩ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও সচেতনতার চিটেফোটাও নেই জনসাধারণের মধ্যে। মাস্কবিহীন অবাধে চলাফেরা করছেন জনসাধারণ, ১ সাটার খোলা রেখে ব্যবসা প্রতিষ্টান চলছে, স্ন্যাক্সবার-হোটেলগুলোতে বসেই খাবার খাওয়া হচ্ছে, চায়ের দোকানগুলোতেও বেকারদের আড্ডা অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল, নিয়মিত জনসচেতনতামূলক অভিযান ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও লোক সমাগম হ্রাস, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত ও জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছেনা। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের গাড়ি দেখলেই দোকানপাঠ বন্ধ হয় আবার তারা চলে গেলেই সব স্বাভাবিক রীতীতেই চলে।
এদিকে, হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ভাল মানের চিকিৎসা সেবা না থাকায় কোনমতে করোনা রোগীদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। করোনার মৃদু হতে মাঝারি উপসর্গের রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়ার মতো ব্যবস্থা আছে। তবে গুরুতর উপসর্গের করোনা রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রেফার করা ব্যতীত ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৪ টি কেবিন ও ১৫ টি শয্যা প্রস্তত রয়েছে এবং ৩৬ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডাঃ আব্দুস সামাদ বলেন, যে হারে করোনা সংক্রামন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই তুলনায় পর্যান্ত ব্যবস্থা তাদের নেই। অক্সিজেন এর তীব্র সংকট রয়েছে। এই মহামারি করোনার কবল থেকে নবীগঞ্জবাসী রক্ষা করতে সরকারের পাশাপাশি সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এগিয়ে আসতে হবে। করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। আইসোলেশন ওয়ার্ডে যে পরিমাণে করোনা চিকিৎসাসামগ্রী আছে তা নবীগঞ্জ উপজেলার জন্য পর্যাপ্ত নয় বলেও তিনি মনে করেন।