নদীতে মাছ ধরা ৭-২৮ অক্টোবর ২২ দিন বন্ধ! রাজবাড়ীতে এখনো খাদ্য সহায়তা পাননি জেলেরা

আইন-অপরাধ আবহাওয়া আরো ঢাকা পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

জহুরুল ইসলাম হালিম, রাজবাড়ী//
মা ইলিশ রক্ষায় ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত রাজবাড়ীর পদ্মা নদীসহ সারাদেশের নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার দিনগত মধ্যরাত থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।

রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর ৮৫ কিলোমিটার অংশে থাকবে প্রশাসনের কড়া নজরদারি। এসব বিষয়ে জেলেদের সচেতন করতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা। ্ ঘোষনায় রাজবাড়ী জেলার প্রায় ২০ হাজার জেলে মধ্যরাত থেকে বেকার হয়ে পড়বে। অথচ জেলেদের কাঁধে ঝুলছে সংসার ও ঋনের বোঝা। কাদ্য সহায়তা না পেয়ে এবং বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় দুশ্চিন্তায় পরেছেন তারা।

রাজবাড়ী জেলা মৎস অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুরাতন তালিকা অনুযায়ী রাজবাড়ীতে ১০ হাজার ২৯০ জন নিবন্ধিত জেলে আছেন। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে এসব জেলের জন্য সরকার ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে নতুন করা তালিকায় জেলেদের সংখ্যা আরও বাড়বে। এ বছর এখনো চুরান্ত তালিকা তৈরি হয়নি। তবে ৬ হাজার জেলের খাদ্য সহায়তার চাহিদা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা বরাট ইউনিয়নের পদ্মা পারের জেলে, আনিচ কাজী, মজিবার, হারুন শেখ, রুবেল শিকদার, নাজিরুদ্দিন সরদার, সমেস বাবুসহ অনেকেই বলেন, রাজবাড়ী এলাকা পুরো পদ্মা নদীতে প্রায় ২০ হাজারেরও অধিক জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। গত দের দুই মাস হলো নদীতে তেমন মাছ মেলে না, কিস্তি ও সুদের উপর দিয়ে সংসার চালছে। তার উপর আবার এ নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় চরম বিপদের মধ্যে পরতে হয় তাদের একদিকে ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ, অন্যদিকে সংসারের অভাব-অনটন, সব মিলিয়ে প্রতি বছর নিষেধাজ্ঞার এ সময় দুশ্চিন্তায় কাটে তাদের দিন। গত বছর তবু ২০ কেজি করে চাল পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি।

রাজবাড়ী জেলা মৎস কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, মাছ ধরা বন্ধে নদীতে সার্বক্ষনিক নজরদারী থাকবে। গত বছর ৪হাজার ৭০০ জেলেকে ৯৪ মেট্রিকটন খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এ বছর তালিকা চুরান্ত না হলেও ৬হাজার জেলের জন্য খাদ্য সহায়তার চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে সেটা পেয়ে যাব। মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ট্রাস্কফোর্স কমিটি, জনপ্রতিনিধি, জেলে পাড়ায়, নদীতে, ঘাটে, বাজারে সভা করেছেন। এছাড়া প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এবং অভিযান সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিকল্প কর্মসংস্থান করার লক্ষ্যে রাজবাড়ীর ৩ উপজেলা গোয়ালন্দ,কালুখালী ও পাংশায় ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৩২৩ জন জেলেকে বকনা বাছুর (গরু) দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। ইতি মধ্যে ওই তিন উপজেলায় প্রায় ৯০জন জেলেকে চুরান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হবে।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.