নওগাঁর রাণীনগরে টাকার জন্য বন্ধুকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার বন্ধু

আইন-অপরাধ আরো রাজশাহী সারাদেশ
শেয়ার করুন...

গোলাম রাব্বানী, নওগাঁ থেকেঃ
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় অটোভ্যান চালক এক যুবকের হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। টাকা চুরির সন্দেহে ও টাকা ফেরত না দেওয়ায় বন্ধু নাহিদ হোসেন অটো ভ্যান চালক যুবক হযরত আলীকে (২৫) গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ নাহিদের নির্মাণাধীন একটি ঘরের মেঝের মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে থানা পুলিশ উপজেলার সদরের পূর্ব বালুভরা গ্রামের নাহিদ হোসেনের নির্মাণাধীন একটি ঘরের মাটির মেঝে খুড়ে লাশটি উদ্ধার করে। হত্যাকাণ্ডের শিকার হযরত আলী উপজেলা সদরের পূর্ব বালুভরা গ্রামের জমসেদ আলী মণ্ডলের ছেলে।

এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা উপজেলার সদরের পূর্ব বালুভরা গ্রামের মো. নাহিদ হোসন (২৬) কে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (১০ জুন) বেলা ১২টায় রাণীনগর থানা পুলিশ আয়োজিত থানা প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) গাজিউর রহমান পিপিএম।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) গাজিউর রহমান জানান, নিহত যুবক হযরত আলী পেশায় একজন অটো চার্জার ভ্যান চালক। পারিবারিক কলহের জেরে হযরত আলী বেশ কিছু দিন থেকে নিজের বাড়িতে থাকতেন না। পার্শ্ববর্তী বন্ধু নাহিদ হোসেনের বাড়িতে থাকেন।

গত ৩ জুন রাত ৯টার দিকে হযরতের ব্যবহৃত অটো চার্জার ভ্যান গ্যারেজে চার্জে রেখে বন্ধু নাহিদের বাড়িতে ঘুমাতে যান। এরপর ৪ জুন থেকে নিখোঁজ হন হযরত।

পরিবারের লোকজন হযরতকে নিখোঁজের ছয় দিনেও খোঁজাখুজি করে না পাওয়ায় তার বাবা জমসেদ আলী ও ফুফু দোলোয়ারা বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে থানায় আসেন। এ সময় হযরতের বাবা ও ফুফু পুলিশকে কিছু তথ্য দেন। তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাচাই করে হযরতের বন্ধু নাহিদ হোসেনকে আটক করা হয়।

এরপর জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদের দেওয়া তথ্যমতে নাহিদের বাড়ির নির্মাণাধীন একটি ঘরের মেঝের মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় হযরতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) আরও জানান, গ্রেপ্তার নাহিদের ড্রয়ারে রাখা ১০-১৫ হাজার টাকা বন্ধু হযরত আলী চুরি করেছে মর্মে সন্দেহ করেন নাহিদ। এরপর ৪ জুন সকালে হযরতকে সেই টাকাগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকলে হযরত তার কোন টাকা নেয়নি মর্মে ফেরত দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।

এ নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও মনমালিন্য সৃষ্টি হয়। এদিন সকালেই নাহিদের কিস্তির টাকা প্রয়োজন হওয়ায় আবারও বন্ধু হযরতের কাছে টাকা চায় নাহিদ।

ওইদিন সকাল আনুমানিক ৯ টার দিকে নাহিদ তার ঘরের গামছা দিয়ে পিছন দিক থেকে হযরতের গলায় গামছা পেঁচিয়ে খাটে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর হযরতের প্যান্টের পকেটে থাকা ৪ হাজার টাকা বের করে নেয় নাহিদ।

এরপর হযরতের লাশ গুমের পরিকল্পনা করে ওইদিন বিকাল ৪টার দিকে নাহিদ নিজেই তার নির্মাণাধীন একটি ঘরের মাটির মেঝেতে গর্ত করে হযরতের লাশ পুঁতে রাখে বলে নাহিদ স্বীকার করেছেন।

এ ঘটনায় নিহত হযরতের বাবা জমসেদ আলী মণ্ডল বাদি হয়ে রাণীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামি মূলহোতা নাহিদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.