টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌপথে আগামী ২ এপ্রিল থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ

আববাওয়া আবহাওয়া চট্টগ্রাম পরিবেশ বিনোদন ভ্রমন গাইড
শেয়ার করুন...

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌপথে আগামী ২ এপ্রিল থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জাহাজ মালিক সমিতি ও স্থানীয় প্রশাসন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও পর্যটক কমে যাওয়ায় মৌসুম শেষ হওয়ার প্রায় তিন মাস আগেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। সোমবার বিকালে জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কুয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্কুয়াব সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, চলতি পর্যটন মৌসুমে সরকারিভাবে সেন্টমার্টিন নৌ-পথে জাহাজ চলাচলের অনুমতি আছে ৩০ জুন পর্যন্ত। এ ছাড়াও আসন্ন বর্ষা মৌসুমে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও পর্যটকদের সংখ্যা কমে আসায় জাহাজ মালিকরা ২ এপ্রিলের পর সব ধরনের জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জাহাজ চলাচলের অনুমতি ৩০ জুন পর্যন্ত হলেও আমরা ২ এপ্রিল পর্যন্ত জাহাজ চলাচলের জন্য রেখেছি। কারণ সেন্টমার্টিনে কিছু পর্যটক রাত্রিযাপন করবেন বলে তাদের আনার জন্য ওই দিন পর্যন্ত জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২ এপ্রিল সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় প্রতিটি জাহাজে দ্বীপের আবর্জনা বোঝাই করে টেকনাফে আনা হবে। এরপর সেসব আবর্জনা টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে। আর প্লাস্টিক বর্জ্য লোকজনের কাছে বিক্রি করা হবে।’

সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আগে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ৯০ শতাংশ মানুষ সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করলেও এখন তাদের অধিকাংশই পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল। পর্যটনের ওপর নির্ভর করে তাদের জীবন-জীবিকা চলে। কিন্তু আগামী দুই দিনের মধ্যে দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যাবে জেনে ইতোমধ্যে ৩০টিরও বেশি হোটেল-রেস্তোরাঁ ও শতাধিক দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সেন্টমার্টিনের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর পড়তে শুরু করেছে। সেন্টমার্টিনের মানুষ কষ্ট পাবে।’

স্কুয়াবের সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘১০টি জাহাজের ধারণক্ষমতা ৩ হাজার ২০০ জন। এ হিসাবে পাঁচ মাসে দ্বীপ ভ্রমণে গেছেন ৪ লাখ ৮০ হাজার পর্যটক। মৌসুমের পাঁচ মাসে জাহাজগুলোতে টিকিট বিক্রি হয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার। কিন্তু কাঠের ট্রলার ও স্পিডবোটে কতজন পর্যটক সেন্টমার্টিনে গেছেন, এ তথ্য জাহাজমালিকদের কাছে নেই।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ চৌধুরী স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকে বলে সাধারণত মার্চের ৩০ তারিখের মধ্যে সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী জাহাজকে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু এবার কিছু পর্যটক সেন্টমার্টিনে ২ এপ্রিল পর্যন্ত অবস্থান করবেন বলে দুদিন বাড়ানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য, প্রতিবছর পর্যটন মৌসুম শুরু হলে সেন্টমার্টিনে পর্যটক পারাপারে এ নৌপথে চলাচল করে ১০টি জাহাজ। বর্ষা মৌসুম ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকে বলে এসব জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখে স্থানীয় প্রশাসন।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.