সুনামগঞ্জ সংবাদদাতাঃ
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে দ্বিতীয় দফায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সুরমা নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্টান ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, আনোয়ার পুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত সোমবার সকাল ৯ টার দিকে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।
জানা গেছে তাহিরপুর- বিশ্বম্ভপুর- সুনামগঞ্জ সড়কের তিনটি স্থানে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে
এতে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় যানচলাচল বন্দ রয়েছে। এছাড়া হাওড়র ও নদী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত থাকায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আরপিনগর, বড়পাড়া, তেগরিয়া, জলিলপুর, কালীপুর, গনীপুর, মল্লিকপুর, হাছনবসত, নতুনপাড়া, বিলপাড়ে অনেক এলাকার নীম্মাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে ওইসব এলাকার মানুষজনের ভোগান্তি চরমে পৌচেছে। পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউটিউবার শাহানা আক্তার শানু বলেন গতকয়েক দিন আগেও আমরা বন্যায় ঘরবন্দি ছিলাম এখন অথিবৃষ্টির কারণে আবারও ঘরবন্দি হয়ে পরছি। আমরা এখন বর্তমানে বচ্চাদের নিয়ে চিন্তিত তাদের লেখাপড়ার সমস্যা হচ্ছে এবং ঘরের ভিতরে পানি ঢুকাতে রান্না করতে ও পারছি না। পৌরশহরের পশ্চিম বাজারে ইজিবাইক গ্যারেজ ও মিল মালিক শাহিদুর রহমান বলেন গত দুই দিনের বৃষ্টিপাতে হাওর সহ সব জায়গায় পানি বেড়েছে। আজ সকালে মিলে এসে দেখি গাড়ীর গ্যারেজ সহ মিলে হাটু পানি। ড্রাইভাররা পানির ভিতরে গাড়ি বার করতে পারবে না এবং মিল চালো করা যাবে না তাই বাধ্য হয়ে মিল বন্দ করেছি এবং ড্রাইভারদেরকে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়েছি। সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের মোশাহিদ আলম মহিম তালুকদার বলেন আমার এলাকায় সুরমা নদীর পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানির কারনে রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছে। আমার ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই ইউনিয়নের নিচু এলাকা ইসলামপুর, ছলিমপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষের বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। এই মুহূর্তে তাদের ত্রাণ সহয়াতা প্রয়োজন।
পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম হোসেন সৈনিক বলেন পাহাড়ি ঢলে পানি ক্রমেই বাড়ছে। ইতিমধ্যে এই পৌরসভার গণিপুর, কালিপুর, হাসনবসত, ও ওয়েজখালী বাজার এলাকার সড়ক প্লাবিত হয়েছে। গত বন্যায় হাওরে পানিতে ভরপুর থাকায় আজকে ঢলের পানি এসেই মানুষের ঘর বাড়িসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমি সুনামগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে পানি বন্দি মানুষদের শুকনো খাবার পৌছে দেওয়ার ব্যবস্তা করছি। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামসুদ্দোহা বলেন গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৯ টায় সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুপুর ১২ টায় সুরমা নদীর পানি আরো বাড়তে পারে। ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে আগামী ২৪ ঘন্টায়। মেঘালয়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।