শিল্পকারখানা বন্ধ থাকার কারণে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসেই বড় ধরনের ধাক্কা এলো রপ্তানি খাতে। জুলাইতে রপ্তানি কম হয়েছে আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় ১১ শতাংশেরও বেশি। লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় কম হয়েছে ৭ শতাংশের মতো। অবশ্য প্রধান পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানিও ১১ শতাংশ কমেছে।\হজুলাই মাসে ঈদের ছুটি এবং লকডাউন মিলে মাসের শেষ ১৩ দিন টানা বন্ধ ছিল সব ধরনের শিল্পকারখানা। উৎপাদন এবং রপ্তানি কার্যক্রম সচল ছিল মাত্র ১৫ দিন। অর্থাৎ গোটা মাসে কার্যক্রম চলেছে আধা মাস। এ কারণেই এত বেশি পরিমাণে রপ্তানি কমলো।\হবাণিজ্য বিশ্নেষকরা মনে করেন, লকডাউন এবং ঈদের ছুটির অভ্যন্তরীণ কারণ তো রয়েছেই। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক কিছু কারণও জুলাই মাসে রপ্তানি কমে যাওয়ার পেছনে দায়ী থাকতে পারে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম সমকালকে বলেন, অপ্রচলিত বাজার শ্রেণির ভারতে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ। দেশটিতে ৭৫ শতাংশ পণ্য রপ্তানি হয় স্থলপথে। অনেক দিন ধরেই স্থলপথ প্রায় বন্ধ। ফলে ভারতনির্ভর পণ্যগুলোর রপ্তানি কমে যাওয়ার কথা। পাট, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ব্যাটারি এমন অনেক পণ্যের রপ্তানিই এ কারণে কমেছে। জাপানসহ এশিয়ার অনেক দেশেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, এর বাইরে অন্য কারণের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে কিছু জটিলতা ছিল। কনটেইনার জট ছিল। অনেক রপ্তানিকারক কলম্বো বন্দরের মাধ্যমে ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।\হরপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদনে দেখা যায়, সমাপ্ত মাসটিতে রপ্তানি হয়েছে ৩৪৭ কোটি ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরের এ মাসে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৯১ কোটি ডলার। আগের মাস জুনের তুলনায় জুলাই মাসে রপ্তানি কম হয়েছে ১১ কোটি ডলার। জুনে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৫৮ কোটি ডলার।\হজানতে চাইলে মাসুদ গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাছির সমকালকে বলেন, তাদের হাতে এখন প্রচুর রপ্তানি আদেশের কাজ। অথচ অর্ধেক মাস কোনো কাজ করা যায়নি। ১৫ দিন কারখানা চালু অবস্থায়ই ২৮৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ১৫ দিন কাজ করা গেলে এর চেয়ে অনেক বেশি পোশাক রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। কারখানা খোলা রাখা গেলে রপ্তানিতে রেকর্ড হতে পারত। মোহাম্মদ নাছির বলেন, কারখানা খোলা রাখা সম্ভব হলে আগামী মাসের মধ্যেই রপ্তানিতে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখা যাবে।\হপ্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই মাসে রপ্তানি কম হয়েছে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ। রপ্তানি তালিকার সব পণ্যের রপ্তানির সার্বিক এই রপ্তানির তুলনায় তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি কম হয়েছে ১১ দশমিক ০২ শতাংশ। মাসটিতে রপ্তানি হয়েছে ২৮৯ কোটি ডলারের পোশাক। গত বছরের জুলাই মাসে এর পরিমাণ ছিল ৩২৪ কোটি ডলার। পোশাকের মধ্যে ওভেনের অবস্থা বেশি খারাপ। শার্ট-প্যান্ট জাতীয় এই পণ্যের রপ্তানি কমেছে ১৮ শতাংশ।