গ্রেনেড হামলায় ১৮ বছর ধরে গ্রেনেডের স্প্রিন্টারের ব্যাথানিয়ে দিন কাটছে রেনুর

আইন-অপরাধ আরো ময়মনসিংহ রাজনীতি সারাদেশ
শেয়ার করুন...

হারুনুর রশিদ শেরপুর প্রতিনিধি:শেরপুরের নকলা উপজেলার পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান,ময়মনসিংহ বিভাগের একমাত্র নেত্রী উম্মে কুলছুম রেনু । যিনি ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলেন। তিনি গ্রেনেড হামলা মামলার ২২ নম্বর স্বাক্ষী। তার বাড়ি শেরপুর জেলারনকলা উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়নের কেজাইকাটা গ্রামে। তিনি ২০০৪ ও ২০০৫ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে ৩ বার জেলে যান। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ও স্বাক্ষী উম্মে কুলছুম রেনুর কাছে সেদিনের ঘটনা জানতে চাইলে । তিনি বলেন, বিট্রিশ হাই কমিশনার আনোয়ার কবিরের ওপরের গ্রেনেড হামলা হয়। তার প্রতিবাদে সেদিন আমাদের ২৩ নাম্বার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ ডাকা হয়। সমাবেশ ডাকলে সেই সমাবেশে আমরা মিশিল নিয়ে যাই। যাওয়ার পরে যখন অস্থায়ী ট্রাকে নেতৃবৃদ্ধ সবাই সেখানে। তখন বক্তব্য একেরপর এক দিতাছে। যখন আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, ততকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্য শেষ। বক্তব্য শেষ করে জয়বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ঠিক এই মুহুর্তে রমনা ভবনের ছাদের ওপর থাইক্কা গ্রেনেড ট্রাকের ওপর পরলো। আর প্রথম গ্রেনেডটি নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে মারা হল। ট্রাক থেকে ¯িøপ কাইটা গ্রেনেডটি নেত্রীর শরিরে না লেগে আমাদের প্রয়াত আইভি আপার শরীরে গিয়ে পরলো। পরে আইভি আপাসহ আমরা সবাই আহত হইলাম। পরে একই সাথে আমাদের শরীরেও। আমরা পড়ে যাই, তখন আরো বোমা ফুটতেছিলো। আর আস্তে আস্তে আমাদেররক্ত জরতাছে আমরা দেখতাছি। কিন্তু কিছু বলতে পারতাছি না। এরপর একেরপর গ্রেনেড পরতাছে। এইটুকু কয়েকটা দেখার পরে। কখনজানি অজ্ঞান হয়ে যাই।
তার পরে কিছু বলতে পারি না। পরে আমি লোক মুখে যা শুনছিতাই আরকি। পরে আমাকে কে বা কারা ঢাকা মেডিকেলে নিয়েযায়। তারপরে আমার অবস্থা ঢাকা মেডিকেলেও খারাপ। আমি নাকিঅজ্ঞান ছিলাম। পরে আমাকে মতিয়া চৌধুরী, সাবের ভাই ঢাকামেডিকেল থেকে আমাকে পরে আমাকে গ্রিন ল্যাব ধানমন্ডিহাসপাতালে নিয়ে যায়। ওখানে আমার চিকিৎসা হয়। ১৪দিন পরজ্ঞান ফিরে আমার। পরে ভারতের বেলুর সিএমসি হাসপাতালে ১মাস চিকিৎসা নিয়ে দেশে আসি। তারপর সাভার সিআরপিহাসপাতালে ৮ মাস চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়িফিরে আসি। একাবারেই প্রথমে হাটতে পারতাম না। তারপরেএকটু হাটতে পারি। এখনো পায়ে বল পাইনা । এরপরেও তার শরীরেগ্রেনেটের অন্তত ৭টি স্প্রিন্টার নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। আরডাক্তার বলছে এইগুলা আর বের হবে না। অনেক অপারেশন করে বের করারচেষ্টা করেছি। কিন্তু বের করা যায় না। কারণ এগুলো রক্তের মাধ্যমেবিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় যায়।তিনি আরও বলেন, আমাকে তো মৃতই ঘোষনা করেছিলো।আল্লাহ বাচিয়েছেন। বেচে আছি। তবে এখনো চিকিৎসাকরিয়ে চলছি। এভাবেই চলবে যতদিন বেঁচে আছি। আমার শরীরেএখনো গ্রেনেটের সাতটি স্প্রিন্টার আছে। সেগুলো আর বেরহবেনা। সেগুলো সাথে নিয়েই মরতে হবে। আর থেরাপি দিয়েইচলতে হয় এখন।তার শরীরে কতগুলো স্প্রিন্টার ঢুকেছিলো জানতে চাইলে তিনিবলেন, গ্রেনেটের অন্তত ৭টি স্প্রিন্টার নিয়ে এখন বেঁচেআছি। আর আমার শরীর থেকে অসংখ্য স্প্রিন্টার বের করা হয়েছে।আর নিজে থেকেও অনেকগুলা বের হইছে। মোট স্প্রিন্টারের হিসেবনাই।নেত্রী সাহায্য করছেন, এ জন্য হয়তো বেচে আছি।তিনি বলেন, সেদিনে সে স্মৃতি মনে হলে ভয়ে সারারাত আরঘুমাতে পারেন না তিনি। এখনো সেই ভয়াবহ স্মৃতির কথা মনেহলে ঘুমাতে পারি না আর সব স্মৃতিগুলি একেপর এক মনে পরতেথাকে। এমন বিকট শব্দ হয়েছিল। আর শরীর থেকে জর জর রক্তপরতেছিলো। এখনো মনে হয় সেই বিভিশিকা দিনটা যেন আরকারো যেন না আসে। আর কেউ যেন এমন কাজ না করে।
সরকারীভাবে কেমন সহযোগীতা পেয়েছেন বা পাচ্ছেন তিনি,তবে সরকার তার চিকিৎসার ব্যয় বহন করছেন। দিয়েছেনআর্থিক সহায়তাও। এজন্য তিনি খুশি। আমরা এখন খুবইভালোভাবে দিনকাটাচ্ছি।ব্যক্তিগত রাজনৈতিক জীবনে নিয়ে বলেন, বর্তমানে নকলাউপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণমহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বে আছেন।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.