রাজবাড়ী সংবাদদাতাঃ
ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদের সেই খুশি ছড়িয়ে পড়েছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের অন্তর্গত মরা পদ্মা নদীর উপর নির্মিত নতুন ব্রীজ এলাকায়। ঈদের দিন থেকে শুরু করে ঈদের তৃতীয় দিনেও সৌন্দয্য পিপাসু দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় সৃষ্টি হয়েছে ওই এলাকায়। বর্ষা মৌসুমে এ এলাকার মনোরম পরিবেশ আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের।
ওই এলাকার সুবিশাল জলরাশি, ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা ও দুই পাশে দাড়িয়ে থাকা ছোট ছোট গ্রাম ও সবুজ ফসলের মাঠের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে গোয়ালন্দের এই নতুন ব্রীজ এলাকাটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যটন এলাকা হিসাবে ঘোষণা করেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়ছার খান।
সরেজমিন আলাপকালে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলায় বিশেষ কোন বিনোদন স্পট না থাকায় ভ্রমন ও সৌন্দর্য পিপাসু দর্শনার্থীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য়ে ভরপুর এই এলাকায় প্রতিনিয়তই ভিড় করেন। ঈদ বা অন্য যে কোন বিশেষ সময়ে এ ভীড় বেড়ে যায় কয়েকগুন। তখন মানুষের তিল ধারনের জায়গা থাকে না। এখানে আগত দর্শনার্থীদের কথা চিন্তা করে সম্প্রতি জাইকার অর্থায়নে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সোলারের মাধ্যমে এই এলাকাটিকে আলোকায়ণ, সুসজ্জিতকরনসহ বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। টয়লেট বাথরুম স্থাপন, যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কার ও সম্প্রসারণ, অবকাঠামো উন্নয়নসহ দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে এখানে আরো কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা দরকার। পর্যটন শিল্পের জন্য প্রায় ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বিশাল এ মরা পদ্মা নদী খুবই সম্ভাবনাময় বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
ভ্রমনপিপাসু ব্যাংক কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, সারা বছর কাজের ব্যস্ততার মধ্যে থাকি। ছুটি পেলেই বাড়িতে এসে একটু প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে নতুন ব্রীজ এলাকায় ছুটে আসি। পর্যটন এলাকা ঘোষণা করায় এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় দর্শনার্থীদের প্রচুর ভিড় বেড়েছে। কোথাও একটু স্বস্তিতে বসে বা দাড়িয়ে কিছু খাওয়ার বা বিশ্রাম নেয়ার কোন উপায় নেই। নেই টয়লেটের ব্যবস্থা। এ বিষয়গুলো প্রশাসনকে ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
গৃহবধু সামিয়া ফারহানা বলেন,শহরের কোলাহল হতে একটু মুক্ত পরিবেশে ঘুরতে আমাদের গোয়ালন্দবাসীর সবচেয়ে প্রিয় জায়গা এই নতুন ব্রীজ এলাকা। সরকারীভাবে এ এলাকাকে পর্যটন এলাকা হিসাবে ঘোষণা দেয়ায় আমরা খুশি। তবে আরো সুযোগ সুবিধা বাড়ানো দরকার।
শিক্ষক লিয়াকত হোসেন বলেন, অন্ন-বস্ত্র,বাসস্থানের মতো বিনোদনও মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। কিন্তু গোয়ালন্দে সেই অর্থে আজো কোন বিনোদন কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। নতুন ব্রীজ এলাকাটি খুবই সম্ভাবনাময়। আমরা সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এখানে বৃহৎ আকারে পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার দাবি জানাই।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, মানুষের ব্যাপক চাহিদা ও সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে নতুন ব্রীজ এলাকাকে পর্যটন এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এখানে আলোকায়নসহ বেশ কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ করা হয়েছে। আগামীত আরো উন্নয়নমূলক কাজ করার চেষ্টা করা হবে।