জহুরুল ইসলাম হালিম, রাজবাড়ী
এক পরিবারের ৮ জন সহ একই গ্রামের ১৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া প্রচন্ড গরমের কারনেও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার আনসের মাঝির গ্রামের কৃষক আব্দুল প্রামানিক গত শনিবার (১১ জুন) বাড়িতে খড় এর পালা দিতে আত্মীয় স্বজন সহ আরও কিছু প্রতিবেশীকে দাওয়াত দেন। আব্দুল প্রামানিকের ভগ্নিপতি একই গ্রামের কৃষক বিল্লাল শেখ (৭০) ও তার স্ত্রী, ছেলেসহ পরিবারের চারজন আব্দুল প্রামানিকের বাড়িতে যান। আব্দুল প্রামানিকের পরিবারের ৪জন সহ গ্রামের গ্রামের কয়েকজন মিলে মোট ১৪-১৫ জন খড় এর পালা দেন। দিন শেষে ওই বাড়িতে সবার জন্য আয়োজন করা হয় চিতই পিঠা আর মুরগির মাংস। রাতে সবাই মিলে একত্রে বসে পিঠা-মাংস খাওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকে পেটে ব্যাথা শুরু হয়।
কৃষক বিল্লাল শেখ বলেন, প্রথমে আমার পেটে ব্যাথা শুরু হয়। এরপর স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের সবার পেটে ব্যাথা ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। স্থানীয়ভাবে ওষুধ, স্যালাইন খাওয়ার পর কোন উন্নতি না হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যার দিকে আমাদের হাসপাতালে ৮জনকে ভর্তি করা হয়। আজ (১৪ জুন) মঙ্গলবার সকালে গ্রামের আরও ৭জন সহ মোট ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
আব্দুল প্রামানিকের স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, শনিবার বাড়িতে খ্যাড়ের (খড়) পালা দিতে আত্মীয়সহ গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ারা নেই। আত্মীয়-স্বজনসহ বাড়ির সবাই ১৫-১৬ জন মিলে কাজ করে। রাতে বাড়িতে সকলের জন্য খাবার আয়োজন করি ব্রয়লার মুরগি আর চিতই পিঠা। খাবার গুলো সবাই একত্রে বসে খাই। রাত খাবার পর থেকেই পেট ব্যাথা, পাতলা পায়খানা শুরু হয়। সবার শরীরে জ্বর দেখা দেয়। আমরা ওষুধ-স্যালাইন সব খাইলেও পরিস্থিতি ভালো হয়না। অবস্থা আরো বেশি খারাপ হলে হাসপাতালে আসি।
হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স মুক্তা সরকার বলেন, সোমবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় এক পরিবারের কয়েকজন ডায়রিয়ার রোগী আসতে থাকে। এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মতো ভর্তি হয়েছে। বহিরাগত আরও কয়েকজন ডায়রিয়া রোগী আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল হক শামীম বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়া বা পানিবাহিত জনিত কারনে পরিবারের সবাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদের নিয়মিত চিকিৎসা চলছে।