মোস্তাফিজুর রহমান, গোবিন্দগঞ্জ সংবাদদাতাঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে ও তার বহিষ্কার এবং বিচার চেয়ে দলের ৩ শতাধিক নেতা-কর্মী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সকাল ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে জনাকীর্ণ এ সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ছাড়াও এলাকার সর্বস্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বিএসসি দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, উপজেলার ১৬নং মহিমাগঞ্জ ইউপি’র নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী মুন্সী রেজওয়ানুর রহমান প্রথম থেকেই বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধাচারণ করে আসছেন।
বার বার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েও কোনদিন কোন নির্বাচনেই বিজয়ী না হওয়া রাজাকার পরিবারের সদস্য এই ব্যক্তির সংক্ষিপ্ত পরিচয় হলো তিনি মুসলিমলীগ পরিবারের সন্তান। মুক্তিযুদ্ধকালীন শান্তি কমিটির নেতা বারী মৌলভী ও হালিম মুন্সীর ছোট ভাই এবং রাজাকার প্রধান ও জামাতের সাবেক আমির গোলাম আজমের ভাগ্নে। খোলস পাল্টিয়ে তিনি যতই মুজিব কোট পরিধান করুন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এলাকাবাসী কখনোই তাকে বা তার পরিবারকে মেনে নিতে পারেনি। মহিমাগঞ্জ ইউপির বিগত উপনির্বাচনে তিনি ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে সর্বশেষ ও ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ৩য় হন। নির্বাচনে অসৎ উপায়ে বিজয়ী হওয়ার প্রলোভনে পড়ে বিকাশ প্রতারকে দুই লাখ আশি হাজার টাকা দিয়ে তিনি দেশ-বিদেশে ভাইরাল হয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীকে ভোট চেয়েছেন, যা মহিমাগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষই জানেন। ইউনিয়নের বর্তমানেও হাইব্রীড আওয়ামীলীগারদের সাথে হাত মিলিয়ে তিনি নিয়মিত দলের বিরুদ্ধাচারণ করেই চলেছেন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিতর্কিত সভাপতি মুন্সি রেজওয়ানুর রহমান নানাভাবে দলীয় নেতা-কর্মীদের ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছেন। দলে হাইব্রীড নেতাদের প্রতিষ্ঠিত করতে আওয়ামী পরিবারের সন্তান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিপুল ভোটে নৌকা মার্কা নিয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান, উপজলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার ভোট করতে গিয়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত ও ৪ দলীয় জোট সরকারের ১৮টি মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাবরনকারী জননেতা আব্দুল লতিফ প্রধানের নামে নানা অপপ্রচার শুরু করেছেন। তার এমন অপকর্মের কারণে তাকে দল থেকে বহিস্কার সহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাকে দল থেকে বহিস্কার করার দাবী জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ সরকার,সহ সভাপতি জিয়াউল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান সরকার, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা, বীরমুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী, খাজা নাজিম উদ্দীন, শুকুর আলী, নাছির হোসেন, মহসিন আলী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বৃন্দ সহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।