গোবিন্দগঞ্জ সংবাদদাতাঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ১৮ জুন শনিবার গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কাউন্সিলের ধারাবাহিক অধিবেশন। এ উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ বেশ উজ্জীবিত। প্রতিদিনই নতুন নতুন ব্যানার ফেস্টুন উপজেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে মোড়ে লাগানো হচ্ছে। পৌর শহরের প্রধান সড়কে দিনের বিভিন্ন সময়ে একাধিক মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কাউন্সিলের উত্তাপ ছড়িয়েছে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে। সবখানেই আলোচনা কে হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। চায়ের টেবিলে দলীয় আলোচনায় স্ব-স্ব পছন্দের নেতার গুণগানে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এবার সমান সংখ্যক প্রার্থী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তাদের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, বর্তমান এমপি আলহাজ্ব প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সাবেক মেয়র বর্তমান সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার, সিনিয়র সহসভাপতি প্রধান আতাউর রহমান বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাখাওয়াত হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু মোহন রায় জীবু বাবু, অধ্যক্ষ এ কে এম আব্দুর নূর ও কামরুল হাসান ফাইয়ান এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জাকারিয়া ইসলাম জুয়েল, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান, মোকাদ্দেস আলী বাদু, শরিফুল ইসলাম তাজু, আ. র. ম শরিফুল ইসলাম জর্জ, আসাদুজ্জামান হিরু ও অধ্যাপক আবু তাহের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও দলীয় কর্মকান্ডে নিজেদের প্রার্থীতা প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি ও সাবেক মেয়র আতাউর রহমান সরকারকে সাধারণ সম্পাদক করে সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার একাধিক সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ও কার্যকাল সম্পর্কে আলাপকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া ইসলাম জুয়েল বিভিন্ন তথ্য আমাদের সামনে তুলে ধরেন। সেই সব তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালে মরহুম জামালুর রহমান প্রধান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে শাহ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বভার পালন করেন। ১৯৭৭ সালেও মরহুম জামালুর রহমান প্রধান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বদরুল-উলা-লাবীব ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৫ সালে জুলফিকার মাহমুদ খসরু ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে মরহুম জামালুর রহমান প্রধান জেলা সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করলে বাবু রাধিকা মোহন রায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও শাহ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম টুকু সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালে মরহুম ফজলুল করিম বি.এস-সি আহবায়ক এবং যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে মরহুম তোজাম্মেল হোসেন প্রধান ও দীপেন দেবনাথ দায়িত্ব পান। পরের বছর ১৯৯২ সালে মরহুম তোজাম্মেল হোসেন প্রধান সভাপতি ও মরহুম জুলফিকার মাহমুদ খসরু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পুনরায় একই কমিটি দায়িত্ব পালন করে। এই কমিটি থাকা অবস্থায় ২০১১ সালে জুলফিকার মাহমুদ খসরু মৃত্যুবরণ করলে প্রধান আতাউর রহমান বাবলু ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এর পর ২০১৩ সালে তোজাম্মেল হোসেন প্রধান মৃত্যুবরণ করলে একটি অংশে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাখাওয়াত হোসেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং অপর অংশে শাহ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম টুকু দায়িত্ব পালন করেন। শেষ পর্যন্ত বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বেই ২০১৬ সালে গোবিন্দগঞ্জ সরকারি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালময় মাঠে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ সভাপতি ও আতাউর রহমান সরকার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়। চলতি বছর ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল ১৮ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।