
কোনো শ্রমিককে কোনো মালিক কালো তালিকাভুক্ত করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।
আজ শনিবার (১৯ জুলাই) বিকালে সাভার পৌর এলাকার গেণ্ডা বালু মাঠে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ পালন উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে একথা জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অনেকগুলো প্রকল্প আছে। প্রথমত আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্ট (শ্রম আইন) যুগোপযোগী করার। এর মধ্যে ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়টি আমরা অত্যন্ত শিথিল করেছি, কোনো শ্রমিককে কোনো মালিক কালো তালিকাভুক্ত করতে পারবে না। এটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবং এটা করতে গেলে মন্ত্রণালয়ের কাছেই আমরা ক্ষমতাটা রাখতে চাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, শুধু কলকারখানা নয়, যেসব প্রতিষ্ঠানে পাঁচ জনের বেশি শ্রমিক কাজ করছেন— প্রত্যেককেই আমি এই আইনের আওতায় আনার জন্য ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি এবং সেভাবেই কাজ হচ্ছে। আজকেই নির্দেশ দিলাম, বাংলাদেশে বহু বড় বড় ক্লাব আছে, যেসব ক্লাবে শ্রমিকরা আছে, সেসব ক্লাবে শ্রমিকদের ওয়েলফেয়ারটা (কল্যাণ) দেখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
‘আজকেই আমি নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি নির্দেশ আকারে যাবে প্রত্যেকটি সামাজিক ক্লাবের কাছে, যেখানেই শ্রমিক আছে তাদেরকে বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্টের নিচে আসতে হবে, শ্রমিকদের ওয়েলফেয়ার দেখতে হবে। আমি শুধু মুখে বলে গেলাম তাই নয়, এবং তাদের লভ্যাংশের ০.৫ শতাংশ শ্রমিকদের কল্যাণে আমাদের তহবিলে জমা দিতে হবে।’
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে গত আট মাসে বহু ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিককে যথেষ্ট পরিমাণে আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। এমনকি কিছুদিন আগে একটি নৌ দুর্ঘটনায় ৭ জন শ্রমিককে নগদ ৭ লাখ টাকা হারে দিয়েছি।
এই সরকার শ্রমিকবান্ধব উল্লেখ করে শ্রমিকদের উদ্দেশ্য করে এসময় উপদেষ্টা বলেন, সবাই মালিকের পক্ষে কাজ করেছে। আমি মালিকের পক্ষেও কাজ করতে চাই, শ্রমিকের পক্ষেও কাজ করতে চাই এবং শ্রমিক নেতাদের সাথেও কাজ করতে চাই।
এসময় শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবির ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের দরজা সর্বদা খোলা জানিয়ে, অযৌক্তিক দাবি নিয়ে মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের মত কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য শ্রমিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে সমাবেশে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, সমাজকল্যাণ ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস. মুরশিদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তরসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
এ ছাড়াও সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক শাখার প্রতিনিধিরা ছাড়াও বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ও বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।