অনলাইন ডেস্কঃ
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করে ২৪ ফেব্রুয়ারি। এর প্রায় তিন সপ্তাহ পর যুদ্ধের মধ্যেই কিয়েভ সফর করেন পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও চেক প্রজাতন্ত্রের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এরপর পশ্চিমা আরও অনেক নেতা কিয়েভ সফর করেছেন।
সবশেষে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগি বৃহস্পতিবারসকালে ট্রেনে করে কিয়েভ পৌঁছান।
তাদের আগে কিয়েভ যাওয়া সব নেতৃবৃন্দই ট্রেনেকরে সেখানে গেছেন। কারণ যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কিয়েভের আকাশসীমা বন্ধ আছে। আর এখনও যুদ্ধ চলায় কিয়েভে ঢোকার সড়কপথও নিরাপদ নয়। তাই রেলপথ ছাড়া কোনো উপায় নেই। যদিও পশ্চিমা অস্ত্র পরিবহন বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন সময় রেলস্টেশন ও রেলপথে হামলা করেছে রাশিয়া। যেমন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন যেদিন কিয়েভ সফর করেন সেদিন পূর্ব ইউক্রেনের ক্রামাটোর্স্ক শহরের রেলস্টেশনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় ৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যান।
আরও যে নেতারা কিয়েভ সফর করেছেন তাদের মধ্যে আছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক, জার্মানির বিরোধী দলের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
পোল্যান্ড ও ইউক্রেনের রেল লাইনের প্রস্থ আলাদা হওয়ায় পশ্চিমা নেতাদের পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ট্রেন পরিবর্তন করে ইউক্রেনের ট্রেনে উঠতে হয়েছে। এই সময় নেতাদের নিরাপত্তায় ইউক্রেনের নিরাপত্তা কর্মীরা ছাড়াও যার যার নিজস্ব দেশের নিরাপত্তা কর্মীরাও মোতায়েন ছিলেন।
এছাড়া নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সফরের খবর যতটা সম্ভবগোপন রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। যেমন গত এপ্রিলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সফর শেষ হওয়ার পর সেই সংবাদ প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যতিক্রমও হয়েছে। যেমন কিয়েভ যাওয়ার সময়ই সেই সফরের খবর প্রকাশ করে দিয়েছিলেন পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাটেওশ মোরাভিয়েৎস্কি। বিষয়টিতে খুশি হননি ইউক্রেনের রেলওয়ের প্রধান ওলেকজান্ডার কামিশিন।
সিএনএনকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সংহতি প্রকাশের বিষয়টি প্রশংসার যোগ্য, কিন্তু বিজ্ঞাপন করাটা একটু তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে।” যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কামিশিন তার দল নিয়ে একটি ট্রেনে অফিস করছেন। এবং এই ট্রেন নিয়মিত তার স্থান পরিবর্তন করে। কখন কোথায় থাকেন সেটি তিনি তার সন্তানদেরও জানান না এবং সন্তানদেরও তাদের অবস্থান প্রকাশ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। ‘‘সবাইকে বুঝতে হবে যে যুদ্ধ চলছে। কিন্তু আমিতো প্রধানমন্ত্রীদের পরামর্শ দিতে পারি না।”
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ফন ডেয়ার লাইয়েনও যাত্রা শুরুর আগে তার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন কিয়েভে থাকার সময়ই টুইটারে সেটি প্রকাশ করেছিল লন্ডনের ইউক্রেন দূতাবাস।