সারাদেশে সপ্তম ধাপে সোমবার ১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেওয়া হবে।
আগের ছয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি ভোটে এর আগের ৬ ধাপে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গত পাঁচ মাসে নির্বাচনী সংঘাত ও হানাহানিতে সারা দেশে অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবারের ভোটে ৯টি ইউনিয়ন পরিষদে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হচ্ছে। বাকিগুলোতে সনাতন পদ্ধতি অর্থাৎ কাগজের ব্যালটে ভোট নেওয়া হবে। এই ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মোট ৭১ জন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন, সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে ১৩ জন এবং সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে ৪৭ জন ভোটের আগেই জয় নিশ্চিত করেছেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী এলাকায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখা জানায়, এই ধাপে পাঁচ হাজার ৮৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭৬ জন, সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী১ হাজার ২৩৬ জন এবং সাধারণ প্রার্থী ৪ হাজার ৬২ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে এক হাজার ৩৫০টি। আর ভোটকক্ষ ৭ হাজার ৮৫টি। সপ্তম ধাপে ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৮২ জন ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৮৬ জন, নারী ভোটার ১১ লাখ ৯৪ হাজার ২২৯ জন আর হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৩ জন।
প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল ষ্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে থাকছে একটি মোবাইল ফোর্স। প্রতি ৩টি ইউনিয়নে একটি করে ষ্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় র্যাবের মোবাইল টিম দুইটি ও একটি ষ্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। আর প্রতিটি উপজেলায় দুইটি বিজিবির মোবাইল টিম, একটি ষ্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে। প্রতিটি উপকূলীয় উপজেলায় কোষ্টগার্ডের দুটি মোবাইল টিম ও একটি ষ্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে।
নির্বাচনী এলাকায় ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এছাড়া গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে এসব এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণাও বন্ধ হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে র্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী এলাকায় টহল শুরু করেছেন। তারা থাকবেন ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে রয়েছেন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ১০ ফেব্রুয়ারি আরও ৮টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হবে। এর মধ্য দিয়ে ৪ হাজার ১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন শেষ হচ্ছে। দেশে শোট ইউপির সংখ্যা চার হাজার ৫৭৪টি হলেও সীমানা নির্ধারণ ও মামলাসহ নানা জটিলতার কারণে বাকি ৪৩৬ টিতে তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।
ইউপি ভোটে এর আগে সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে। এই দুই ধাপেই অর্ধশতাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। করোনা সংক্রমণের কারণে প্রথম ধাপে দুই ভাগে নির্বাচন হয়েছে। দ্বিতীয় ভাগের নির্বাচন হয়েছে গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে। তখন থেকেই সারাদেশে নির্বাচন পরিস্থিতি সংঘাতময় হয়ে উঠেছিল।