অনলাইন ডেস্কঃ ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে করোনাভাইরাসের আগের ধরনগুলো থেকে কয়েকটি নতুন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আগের ধরনগুলোর উপসর্গ থেকে এর পার্থক্য সামান্য হলেও এগুলোই একসময় প্রধান লক্ষণ হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করছেন তাঁরা।
গত ২৪ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করা করোনার নতুন ধরনের সন্ধান দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এর পরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটিকে একটি ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে আখ্যা দেয়।
এটি খুব দ্রুত ছড়ায়, ভ্যাকসিনকে এড়াতে সক্ষম এবং খারাপ ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে- যা আগের ধরনগুলোতে দেখা যায়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা কমবেশি সবাই সর্দি বা ঠাণ্ডাজনিত উপসর্গের কথা বলছেন। জেডওই কভিড উপসর্গ স্টাডি অ্যাপ এর ডাটা এবং দ্য সান এর রিপোর্ট অনুযায়ী, যারা ওমিক্রন পজিটিভ হয়েছে তাদের সবাই ঠাণ্ডাজনিত নানা উপসর্গে ভুগছেন। এর মধ্যে আছে মাথাব্যথা, নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়া, হাঁচি ও গলা ব্যথা।
এসব লক্ষণ বা উপসর্গ তো করোনার আগের ধরনগুলোতেও ছিল। তাহলে নতুন উপসর্গ কি?
দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ডা. অ্যানজেলিক কোয়েৎজ বলেন, যে তিনটি উপসর্গ অন্যান্য ধরন থেকে ওমিক্রনকে আলাদা করছে সেগুলো হলো- তীব্র অবসাদ ও ক্লান্তি বোধ, শরীর ব্যথা এবং সেই সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা।
ডা. অ্যানজেলিক ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত একটি ছয় বছর বয়সী কন্যাশিশুর উদাহরণ টেনে বলেন, তার শরীরের তাপমাত্রা অনেক এবং তার পালস রেট-ও খুব বেশি। বিষয়টিকে তিনি ‘খুব কৌতূহলোদ্দীপক’ বলে আখ্যাইয়িত করেছেন।
এ বিষয়ে আশার বাণী শুনিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা।
তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আক্রান্তরা খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন না। তবে বিষয়টি এখনো পর্যবেক্ষণ পর্যায়ে আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষস্থানীয় একজন উপদেষ্টা ডা. মারিয়া ভ্যান কারখোভ বলেন, আমরা ওমিক্রনের ক্ষেত্রে প্রফাইল চেক করে এমন রিপোর্ট দেখেছি, যেগুলো হালকা রোগ থেকে গুরুতর রোগ পর্যন্ত যায়।
তিনি আরো বলেন, আক্রান্ত হওয়ার প্রথম দিনগুলোতে কিছু রোগী হালকা উপসর্গ নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন।
বতসোয়ানার একজন স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, সংক্রামিত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জনের কোনো লক্ষণ ছিল না, অন্য তিনজনের ‘খুব হালকা’ অসুস্থতা ছিল। ইংল্যান্ডে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট আক্রান্ত আরো ৯ জনের সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে যুক্তরাজ্যজুড়ে রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২২।
করোনার সর্বশেষ নতুন ধরন ওমিক্রন এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া আগের ধরন ডেল্টা মিলে করোনাভাইরাসের একটি সুপার ভ্যারিয়েন্ট বা আরও ভয়ঙ্কর নতুন কোনো ধরনের জন্ম দিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট পিটার হোয়াইট।
ব্লুমবার্গ এর মতামত কলামিস্ট অঞ্জনী ত্রিবেদীর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
পিটার হোয়াইট বলেন, ‘ভাইরাসরা দ্রুত পরিবর্তিত হয়। এজন্য প্রতি বছরই আমাদেরকে ফ্লু ভ্যাকসিন সমন্বয় করতে হয়। কিছু ভাইরাস অন্যদের তুলনায় দ্রুত পরিবর্তিত হয়। ভাইরাস যেভাবে টিকে থাকার জন্য বারবার বদলে যায় সেভাবেই আমাদেরকেও টিকা বদলে ফেলতে হবে।