ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। দুপুরে কিছুসময় রোদের দেখা মিললেও আকাশে ছিল মেঘ। এই মেঘ দু-একদিনের মধ্যে কেটে গিয়ে শীত জেঁকে বসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, শুক্রবার রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। এর সঙ্গে শীত শুরু হওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতি কিছুটা পাল্টে গেছে যার কারণে শীতকালের সময় এবং ধরন ঠিক আগের মতো হচ্ছে না।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এই মাসের ১০ তারিখের পর থেকে তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু হবে। উত্তরাঞ্চলে কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে। আরেক জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান মনে করছেন শীতকালের শুরুটা মূলত ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধের দিকে অর্থাৎ, ১৬ তারিখের পর কোনো একটা সময় থেকে হবে।
তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী বৃষ্টিপাতের পরপর তাপমাত্রা হঠাৎ করে নেমে গেলে শীত অনুভূত হবে, তবে ‘প্রকৃত অর্থে এটি শীতকাল নয়।’ তিনি মনে করেন, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি যখন আকাশ মেঘমুক্ত হয়ে বায়ুমণ্ডল পুরোপুরি শুষ্ক হয়ে যাবে তখন শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, যেটা হতে কিছুটা সময় লাগবে।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘এ মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে একটা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আসার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে সেটি পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা উচ্চতম রেকর্ড ছুঁয়েছে, যার একটা প্রধান কারণ ছিল ‘এল নিনো’ নামের প্রাকৃতিক আবহাওয়া চক্র। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ‘এল নিনো’ ও একই সঙ্গে বিশ্বের বাড়তে থাকা তাপমাত্রার প্রভাবে এবারের শীতকালটা আগের তুলনায় কিছুটা উষ্ণ হতে পারে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘এল নিনো’ সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। মে মাস পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। এর ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে সাধারণত বেশি তাপমাত্রা অনুভূত হতে পারে।
এই আবহাওয়াবিদ জানান, এ বছর ডিসেম্বর মাসে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে। অন্যদিকে, আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আবহাওয়ার ব্যাপারে কোনোকিছুই নিশ্চিত করে বলা যায় না। যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।
গেল তিন মাসে কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করলে শর্ট পিরিয়ডে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আসার সম্ভাবনাকেও কিন্তু উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। তবে এটুকু বলা যায় যে, সামগ্রিকভাবে এবার শীতের সময় কিছুটা ওয়ার্ম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।