ই-কমার্সের নামে প্রতারণার দায় সরকার এড়াবে কীভাবে: অর্থমন্ত্রী

অর্থনীতি আইন-অপরাধ জাতীয় তথ্য প্রযুক্তি পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

অনলাইন ডেস্কঃ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ই-কমার্সের নামে প্রতারণা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব গভর্নমেন্টকে নিতে হবে। গভর্নমেন্টের দায়িত্ব এটি। গভর্নমেন্ট এই দায়িত্ব এড়াবে কেমন করে। বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

ই-কমার্সের নামে প্রতারণার বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের প্রতারণা আগে যেভাবে হতো, এখন হয়তো ভিন্ন আঙ্গিকে আসছে। আগে ম্যানুয়ালি করতো, এখন ইলেকক্ট্রনিক্যালি করছে। এখন ডিজিটাইজড ওয়েতে এগুলো করা হচ্ছে।

এদিকে এ ব্যাপারে সরকার কোনো দায় নেবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চার মন্ত্রীর এক বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ইভ্যালিসহ যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করেছে, তাদের কাছে গ্রাহকের যে পাওনা; তা পরিশোধের ব্যাপারে সরকার কোনো দায় নেবে না।

তিনি বলেন, তবে আইনি প্রক্রিয়ায় দেখা হবে তাদের কাছে দায় শোধের সম্পদ আছে কিনা; কিংবা লুকানো অবস্থায় তাদের কোনও সম্পদ আছে কিনা। যদি থাকে তবে এগুলো থেকে গ্রাহকের দায় শোধ করা হবে। ই-কমার্সসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ই-কমার্স খাতের নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজিটাল কমার্স আইন করা হবে। পাশাপাশি আইন প্রণয়ন করার জন্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ করবে সরকার। এরই মধ্যে যারা ই-কমার্সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের অভিযোগ জানতে ও তদন্ত করতে ব্যবস্থাপনা সেল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যারা প্রতারণা করছে; তাদের বিচারের জন্য সিকিউরিটি ও মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট সংশোধন করা হবে। বৃহস্পতিবার কাজ শুরু হবে।

একই দিন দুপুরে কারওয়ান বাজারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কার্যালয়ে ‘সোর্সিং বাংলাদেশ-২০২১ ভার্চুয়াল এডিশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির গ্রাহকদের অর্থ কীভাবে ফেরত দেওয়া যায় তা বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইভ্যালির সম্পদ এবং দায়-দেনার হিসাব করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকদের পাওনা টাকা কি করে ফেরত দেওয়া যায় সে বিষয়ে সরকার বিবেচনা করছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমরা দেখেছি- ডেসটিনির মতো প্রতিষ্ঠানের সম্পদ কাজে লাগানো হয়নি। সেগুলো অন্যরা ভোগদখলে রেখেছে। অথচ গ্রাহক তাদের পাওনা বুঝে পাননি। ইভ্যালির ক্ষেত্রেও যেন এমনটা না হয় সেজন্য গ্রাহকদের টাকা ফেরতের চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যানকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু এটা তো সমাধান না। গ্রাহকরা যেন তাদের টাকা ফেরত পান আবার অভিযুক্তরাও যেন শাস্তি পায় উভয় বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সরকার।’

টিপু মুনশি আরও বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ৩০ হাজার অনলাইন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০-১২টির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তাই সামগ্রিকভাবে অনলাইন প্রতিষ্ঠানকে খারাপ বলা যাবে না। ভোক্তাদেরও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। আড়াই লাখ টাকার মোটরসাইকেল এক লাখ টাকায় কীভাবে দেওয়া সম্ভব সে বিষয়ে চিন্তা করে তারপর বিনিয়োগ করতে হবে।’ এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী অনলাইন কেনাকাটায় টাকা বিনিয়োগে গ্রাহকদের সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান। সূত্রঃ সমকাল


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.