
সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জে ছাত্র-জনতা ছত্রভঙ্গ
লাকসাম প্রতিনিধি:
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাউছার হামিদের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো লাকসাম। টানা তিনদিন ধরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচির পর শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করে লাকসামকে প্রায় অচল করে তোলে।
বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লাকসাম বাইপাস চৌরাস্তায় অবস্থান নিয়ে সাধারণ ছাত্র-জনতা ঢাকা-কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন—বদলি আদেশ বাতিলের সুস্পষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে, প্রয়োজনে রেল চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অবরোধ চলাকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইউএনও কাউছার হামিদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলন চাকমা এবং লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা আন্দোলনকারীদের সড়ক ছাড়ার অনুরোধ জানান। তবে ছাত্ররা তা প্রত্যাখ্যান করে দাবিতে অনড় থাকে। সন্ধ্যা নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করলে কয়েকজন আহত হয় এবং আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
এদিকে, ইউএনও কাউছার হামিদের বদলি ও রিলিজ আদেশ ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনে পৌঁছেছে। তিনি নতুন কর্মস্থল বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লাকসামের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ছাত্র প্রতিনিধি ইউএনও’র বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে। কিন্তু ওই রাতেই তাঁর রিলিজ আদেশ জারি হলে লাকসামে আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে বলেন, জনগণের স্বার্থে কাজ করায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করে ইউএনওকে বদলি করিয়েছে। জনগণের আস্থার প্রতীক এই কর্মকর্তা বদলিকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে তারা অবিলম্বে আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান।