‘সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’- এই মহৎ উক্তিটি বুকে ধারণ করে ছোটবেলা থেকেই সুজনের পথ চলা। সমাজের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নিপীড়িত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা তাকে সবসময় ব্যথিত করতো। তাদের জন্য তার মন কাঁদতো। নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম নেওয়া সুজনের ইচ্ছা এবং বাসনা এই সুবিধাবঞ্চিত , অসহায়, দরিদ্র মানুষদের জন্য কিছু করা। আমৃত্যু নেওয়া শপথ অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। একাদশ শ্রেণিতে পড়াবস্থায় কর্মক্ষম বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে অন্ধ হয়ে যান। একসাথে সংসারের গ্লানি টানা এবং পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যায়। সুজন দমে যায়নি, সকল বাধা বিপত্তি কে দুরে ঠেলে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রী শেষ করেন। একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পাশাপাশি সামাজিক কাজ সম্পাদন করেন। বেতন এবং টিউশন বাবত আয় অর্থ হতে এতিম ও অসহায় দরিদ্র শিশুদের সহায়তা ও শিক্ষা উপকরণ কিনে দেন। মানুষের রক্তের প্রয়োজনে একটি ফোনে সুজন দ্রুত সময়ে রক্ত সরবরাহ করে দেন। কুমিল্লার লাকসামের সামাজিক ও জনহিতকর সংগঠন ‘ভিক্টোরি অব হিউম্যানিটি অর্গানাইজেশন ‘এর সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন করোনাকালীন সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা আক্রান্ত মানুষের অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্রয়োজনীয় ঔষধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, খাবার বাড়িতে পৌঁছে দেন। গরীব অসহায় কৃষকদের ধান রোপন, কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে সহযোগিতা সহ সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ সম্পর্কে সচেতন করেন।
এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে বিনা পয়সায় গরীব ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন।
লাকসামের কান্দিরপাড় ইউনিয়নের ইরুয়াইন গ্রামের সন্তান সুজন কোভিড-১৯ এর সময় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ভিক্টোরি অব হিউম্যানিটি অর্গানাইজেশন এর হয়ে শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলেন্টিয়ার এওয়ার্ড -২০২০ অর্জন করেন। কমিউনিটি লিডারশীপ এন্ড সার্ভিস ক্যাটাগরিতে।
তার ঝুলিতে রয়েছে আরও বহু সম্মাননা ও স্বীকৃতি।
স্বীকৃতি কিংবা মর্যাদা পেতে নয়, মানুষের কষ্ট লাঘবে আমৃত্যু কাজ করে যেতে চান অদম্য এই স্বেচ্ছাসেবী।
সুজনরা আছে বলেই নিপীড়িত মানুষ শান্তির সুবাতাস পায়।
এমন সুজন সবার ঘরে জন্মাক এমন টাই প্রার্থনা সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের।
সুজনরা যুবসমাজের সম্পদ । সুজনদের অনুপ্রেরণায় এমন হাজারো তরুণ যুবা এগিয়ে যাক দেশ বিনির্মাণে।