আল-হুদা মালী,শ্যামনগরঃ বোরোর বাম্পার ফলনে শ্যামনগর উপজেলার কৃষকদের মনে যে খুশির ঝিলিক দেখা দিয়েছিল। গত ৯ মে থেকে ১১মে নিম্নচাপের অতি বৃষ্টিতে তা ফিকে হয়ে গেছে। ধান মাটিতে শুয়ে পড়ার পাশাপাশি কেটে রাখা ধান পানিতে ডুবে গেছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের কালাচাঁদ মিয়া বলেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম, বাম্পার ফলনে খুশিও হয়েছিলাম। বৈরী আবহাওয়া অতিবৃষ্টির ভয়ে আগাম ধান কাটাও হয়েছিল। কিন্তু ধান কাটার পর ঈদের দিন সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টির পানিতে তা তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ জমি থেকে পানি অপসারণ এর কোন ব্যবস্থা নেই। কিছু জমি থেকে পানি বের করে ধানগুলো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রমিক দরকার হলেও পাওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকের দাম দ্বিগুণ দেওয়ার পরেও মিলছেনা শ্রমিক। কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের রিপন বিশ্বাস ও বুইচিতলা গ্রামের আজাদ মিয়া। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, ঈদুল ফিতরের দিন সকাল থেকে জেলায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। কৃষি সম্প্রসারণ উপপরিচালক হরিবুলা সরকার জানান, অসময়ের বৃষ্টির কারণে কৃষকেরা অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অতীতে জ্যৈষ্ঠ মাসে এ রকম বৃষ্টি দেখা যায়নি। তিনি বলেন, দুর্যোগের আশঙ্কায় কৃষকদের ৮০ শতাংশ ধান পাকার পর বিচালির আশায় না থেকে কাটার পরামর্শ দিলেও বিচালির আশায় অনেকেই তা কাটেননি। তবে ইতিমধ্যে ৪০ শতাংশ জমির ধান কৃষকেরা ঘরে তুলেছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে মাঠে খোঁজ নিচ্ছেন।গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠের ধান পানিতে ডুবে আছে। কৃষকদের কেউ কেউ কোমরসমান পানিতে দাঁড়িয়ে ভেসে থাকা কাটা ধান সংগ্রহ করছেন। আবার কেউ কেউ পানিতে তলিয়ে থাকা ধানগাছ কাটতে ব্যস্ত।
কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চারটি উপজেলায় বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৩০৬ হেক্টর এবং আবাদ হয়েছে ৩৭ হাজার ২৩০ হেক্টরে। আবাদ কম হলেও ফলন হয়েছে বাম্পার।