বাঘা সংবাদদাতাঃ
রাজশাহীর বাঘায় জীবন সংগ্রামে হার নামানা মানুষ বাদাম বিক্রেতা মাজার হোসেন ( ৬২)। এলাকার বিভিন্ন পথে পথে বাদাম বিক্রি করে চলে তার অভাবী সংসার। দারিদ্রতার নির্মম কষাঘাতে ক্ষত-বিক্ষত মাজার । ২৫ বছর আগে স্বল্পপুজি নিয়ে পথে নেমেছেন বাদাম বিক্রি করতে। বিভিন্ন স্থানে গোলায় ঝোলানো বাদামের ঝুড়ি নিয়ে তাকে দেখা যায় অলি-গলি, স্কুল-কলেজ, বাজার বা মাজারের রাস্তায়।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায় , বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়নের জোতরাঘব গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিক এর ছেলে মাজার। স্ত্রী মারাগেছে ৯ বছর আগে। মাজারের সংসারে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ছেলে মেয়েসহ ৫ জন। ৬২ বছর বয়সেও রাস্তায় হেঁটে হেঁটে বাদাম বিক্রি করতে হয় তাকে । বাড়ির ভিটে ছাড়া সহায় সম্পদ বলতে আর কিছু নেই তার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে দিনে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। তা দিয়েই কোনো রকমে ঘুরছে মাজারের অভাবী সংসারের চাকা।
বাঘা মাজার এলাকায় কথা হয় মাজার হোসেন এর সাথে। জানতে চাইলে অসহায় মাজার হোসেন বলেন, ২ টাকা ছটাক প্রথম বাদাম বিক্রি করেছি। এখন ২০ টাকা শ। দেখতে দেখতে ২৫/ ২৭ বছর হয়ে গেছে। ‘সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমি প্রায় ৫/৬ কেজি বাদাম বিক্রি করি। অনেক কষ্ট হয় সংসার চালাতে। আমার ছেলে-মেয়েদের জন্যই তো করি। আর এখন যে বয়স আমার ভারি কোন কাজও করতে পারিনা । আল্লাহ আমাকে ভালো রেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা তিন ভাই। পদ্মা নদীর চরে বাবার ১২-১৫ বিঘা জমি ছিল। কিন্তু লিখা পরা না জানায় সুযোগ বুঝে দুঃসম্পর্কের এক চাচা তা নিজের নামে রেকর্ড করে নেই। এখন বাড়ির ভিটা ছাড়া আমাদের কিছুই নেই। অন্যরা দিন মজুরী করে সংসার চালাই।
মাজারের কাছে বাদাম কিনতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকে মাজার চাচাকে বাদাম বিক্রি করতে দেখি। অনেক ভালো মনের মানুষ তিনি। তাকে দেখলে ছাত্র জীবনের কথা মনে পরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে বাদাম খাওয়া সহ অনেক কথা।
উপজেলার অনেক সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী সহ বাদাম ক্রেতাদের কাছে প্রিয় মুখ এই বাদাম বিক্রেতা মাজার চাচা।