তহিদুল ইসলাম রাসেল
চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের qদীর্ঘদিনের সমস্যা নিরাপদ নৌ যাতায়াত। মূল ভূখন্ড থেকে বিছিন্ন হওয়ায় এ দ্বীপের সাথে স্থল পথে কোন যোগাযোগ মাধ্যম নেই, যে কয়েকটি নৌ পথ রয়েছে সেগুলোও অনিরাপদ।
স্বাধীনতা পরবর্তী সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের সব সময় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে । এ পর্যন্ত সন্দ্বীপের নৌ পথে শলিল সমাধি হয়েছে অনেকের আবার অনেকেই পঙ্গুত্ববরন করেছে।
সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের নৌ দূর্ভোগ লাগবে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী একনেকে এ উন্নয়ন প্রকল্প পাশ করেন।
গত (২১ ডিসেম্বর) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁয়ে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে জেটি ও টার্মিনাল ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিএ এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষর হয়।
সন্দ্বীপ অংশে আরসিসি জেটি নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজটি করবে ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন বিআইডব্লিউটিএ’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক এ এস এম আশরাফুজ্জামান এবং ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের পরিচালক তরফদার মো. রুহুল সাইফ।
জেটি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, এই প্রকল্পের অধীনে সন্দ্বীপ অংশে সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ১০ মিটার চওড়া জেটি নির্মাণ করা হবে।
সন্দ্বীপের গাছুয়া ঘাটে একাধিক টার্মিনাল ভবন, মালামাল ওঠানামার জন্য আরসিসি জেটিসহ বেশকিছু স্থাপনা নির্মাণ হবে। সন্দ্বীপ অংশে আরসিসি জেটিসহ ও টার্মিনাল ভবনসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা নির্মাণে ৩৫৬ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ১৮ মাস।
‘সন্দ্বীপ চ্যানেলটি’ সাড়ে ৪ লাখ মানুষ ব্যবহার করেন। পণ্য পরিবহনের জন্যও ব্যবসায়ীদের কাছে চ্যানেলটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই জেটি নির্মাণ হলে সব শ্রেণির মানুষ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। যেখানে শুধুমাত্র সন্দ্বীপের জেটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৫৬ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের মিরসরাই, সোনাদিয়া দ্বীপেও জেটি ও টার্মিনাল নির্মান হবে। আর মাঠ পর্যায়ে আগামী জানুয়ারি থেকে সন্দ্বীপে জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌ-মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান তরফদার মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, সন্দ্বীপসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে ক্যাবল এর মাধ্যমে নদীর তলদেশে দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় সন্দ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হচ্ছে। সন্দ্বীপে অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে।
সন্দ্বীপে ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জেটি আছে। সন্দ্বীপের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী রাতে চলাচলের জন্য বিআইডব্লিউটিএ এর পক্ষ থেকে সন্দ্বীপ চ্যানেলে ‘বয়া’ বসানো হয়েছে। নতুন জেটি ও টার্মিনাল ভবনের মাধ্যমে সন্দ্বীপের মানুষের দীর্ঘদিনের দুঃখ-কষ্ট গুচে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন এ জেটি নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসবে। পর্যটন ও অর্থনীতিতে ব্যাপক গতি সঞ্চারিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ ডিসেম্বর ২০২২ চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশের জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।