বগুড়ায় শ্বশুরবাড়ি দাওয়াতে এসে আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

আইন-অপরাধ আরো ঢাকা রাজশাহী সারাদেশ
শেয়ার করুন...

কাওছার দূর্বার নিউজঃ
দেশজুড়ে আলোচিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার অন্যতম যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আলাউদ্দীন (৩২)কে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবগঞ্জ থানার পুলিশ আলাউদ্দীনকে উপজেলার মোকামতলা তার শ্বশুরবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক কুমার দাস (পিপিএম)বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার মোকামতলা তার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে ঈদের দাওয়াত খেতে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছিল। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আলাউদ্দিন সে পঞ্চগড় জেলার অটোয়ারী থানার ছোটধাপ এলাকার হাবিবুর রহমানের পুত্র। আলাউদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নস্থানে পলাতক ছিলেন। ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় আলাউদ্দীন অনুপস্থিতিতে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। মামলা চলার সময় থেকেই আলাউদ্দীন পলাতক ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির-নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দিনদুপুরে খুন হন বিশ্বজিৎ দাস। অনেক টিভি চ্যানেলের ক্যামেরার সামনেই ওই ঘটনা ঘটে। তাকে নির্মমভাবে হত্যার দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
ওই হত্যাকাণ্ডের এক বছর পর ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ আসামির মধ্যে ৮জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়। ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ২জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ৪জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও ২জনকে খালাস দেন। এ ছাড়া বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আপিলকারী ২জনকে খালাস দেওয়া হয়।
২০১৩ সালের ১৮ই ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-৪ এর বিচারক এবিএম নিজামুল হক চার্জশিট আমলে নিয়ে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন৷ রায়ে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
এ মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৮ আসামিরা হলেনঃ রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, কাইউম মিয়া টিপু, সাইফুল ইসলাম, রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমন৷ এদের মধ্যে রাজন তালুকদার ও মীর মোহাম্মদ নূরে আলম ওরফে লিমন পলাতক রয়েছেন, বাকিরা কারাগারে৷

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেনঃ মো. আলাউদ্দিন মো. ওবায়দুল কাদের ওরফে তাহসিন, ইমরান হোসেন ওরফে ইমরান, মনিরুল হক ওরফে পাভেল, আজিজুর রহমান ওরফে আজিজ, আল আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, খন্দকার মো. ইউনুস আলী ওরফে ইউনুস, তারিক বিন জহুর ওরফে তমাল, গোলাম মোস্তফা, কিবরিয়া, মোহম্মদ কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেএন ওরফে মোশারফ৷ এদের মধ্যে কেবল গোলাম মোস্তফা, কিবরিয়া, ইমরান হোসেন, ও আলাউদ্দীন গ্রেফতার হয়েছে।
নিহত বিশ্বজিৎ ২০০৬ সাল থেকে ঢাকার শাঁখারীবাজারে দর্জির কাজ করতেন বিশ্বজিৎ। দোকানের নাম ছিল নিউ আমন্ত্রণ টেইলার্স। বড় ভাইয়ের দোকান। নিহত বিশ্বজিৎ দাসের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর দাসপাড়া গ্রামে।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.